মোঃ মনির হোসেন, ময়মনসিংহ : ত্রিশাল ময়মনসিংহ থেকে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় নাজমুল হক ২০১৩ সালে একটি দালাল চক্রের হাত ধরে পারি জমান মালয়শিয়ায়। ১৪দিন পরই জানতে পারে তার ভিসায় কাজের অনুমতিই নেই, জীবনে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার।
আরও পড়ুন : বাঙালির ইতিহাসে ১৭ এপ্রিল স্মরণীয় দিন
জীবন ধারনের জন্য লুকিয়ে লুকিয়ে কাজ করতে হয় তাকে। এক মাস কাজ করে ৩মাস লুকিয়ে থাকতে হয় বদ্ধ কক্ষে। এভাবে চলতে থাকে নাজমুলের প্রবাস জীবন যুদ্ধ। কারখানায় কর্মরত ইউনিটে আগুন লেগে পুড়ে যায় নাজমুলের ব্যক্তিগত পরিচিতির কাগজপত্রটুকুও। এ যেন কপাল পুড়ে যাওয়ার মত অবস্হা।
কিছু দিনের মধ্যেই নাজমুলের চাকরি চলে যায়। নতুন কোন স্হানে চাকরির জন্য নূন্যতম পরিচয়ের কোন কাগজটিও নেই শুধুমাত্র দেহটি ছাড়া।
আরও পড়ুন : হাওরের ধান নষ্ট হলে চালের দাম বাড়বে
২০১৯ সাল থেকে দেশে ফেরার জন্য নাজমুল বার বার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়। পরিবারের সদস্য বলতে নিজ গ্রাম ত্রিশাল উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নে বসবাস করেন নাজমুলের পিতা। মানসিক ভাবে অসুস্থ বাবা পুত্রের কঠিন পরিস্থিতির চিন্তায় এখন সম্পূর্ণ পাগল।
প্রতিবেশী শরীফ ও,খাদিমুল ও ইউ পি সদস্য সাইফুল ইসলাম প্রবাসী নাজমুলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ত্রিশালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দারস্থ হন। এখানেও তাদেরকে ফিরতে হয় খালি হাতে।
আরও পড়ুন : এবার বরিসের ওপর রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা
সাইফুল ইসলামও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন কিন্তু হাল ছাড়েননি।বিভিন্ন জায়গায় আলাপ আলোচনা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে ত্রিশাল উপজেলার সন্তান, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক উপকমিটির সদস্য নূরুল আলম মিলন পাঠান’র সাথে আলাপ করেন তারা।
উনার মনে বিষয়টি ভীষন রকম আঘাত করে।প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহের পর মালয়শিয়াস্হ বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেন মিলন পাঠান, নাজমুলের সমস্ত জটিলতা দূর করেন।
আরও পড়ুন : ইউক্রেনে ১৯০০ বেসামরিক লোক নিহত
নাজমুলের জীবনে এখন ফিরেছে স্বস্তির নিশ্বাস। মুঠোফোনে নাজমুলের মালেশিয়ান নাম্বারে কথা বললে নাজমুল আবেগে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন।নাজমুল বলেন-
আমি ভাবতাম আমার তো নাম পরিচয় প্রমান নাই।এ দেশে আমি মারা গেলে আমি যে নাজমুল, তারা কেমনে চিনবো? আমার লাশ কেমনে আমার আত্মীয় স্বজনের কাছে যাইবো?
আরও পড়ুন : এবার বরিসের ওপর রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা
আমি আল্লারে ডাকতাম। আল্লাহ আমার কথা শুনছে মিলন ভাইরে ওছিলা পাঠাইছে। আল্লাহ তাঁর ভালা করুক। তিনি দেশে ফেরার বিষয়ে বলেন-" এহন আর কোন সমস্যা নাই, আমি সব কাগজপত্র হাতে পাইছি,ইনশাআল্লাহ আগামী ১৭-২০ এপ্রিলের মধ্যে আমি দেশে ফিরতে পারবো।
সান নিউজ/এইচএন