হলি সিয়াম শ্রাবণ, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বোকাইনগর ইউনিয়নের প্রায় ১২টি গ্রামে ঝড় ও শিলাবৃষ্টির তান্ডবে প্রায় পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে উড়ে গেছে অনেকের ঘরবাড়ির টিনের চাল। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ধানের জমি ও সবজি ক্ষেত।
আরও পড়ুন: হুমায়ুন আজাদ হত্যা: ৪ জঙ্গির ফাঁসি
গত রোববার রাতে ঝড়ের তান্ডবের পর সামর্থবানরা ঘরবাড়ি মেরামত করতে পারলেও বিপাকে পড়েছন নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষজন। ঘুরে দাঁড়াতে তারা সরকার ও প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।
এর আগে গত রোববার রাতে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি বোকাইনগর ইউনিয়নের বেতন্দর, কাওলাটিয়া, বড়বাগ, রামজীবনপুর, কাছিমপুর, টাঙ্গাটিপাড়া, নাহড়া, তারাপুর, ভেংড়ি ও তেলিহাটি সহ প্রায় ১২ টি গ্রামের ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমি, সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার বলেন ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে উপজেলায় ১১৭ হেক্টর জমির ধানের ফসল ও ৩৫ হেক্টর জমির সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। তবে স্থানীয়রা জানান ফসলের জমির ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে।
আরও পড়ুন: আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো ঘুরে দেখা যায় ঝড়ের ক্ষতচিহ্ন। অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে আছে। সড়কের পাশে ও বাড়ির উঠানে উপড়ে পড়ে আছে ছোট-বড় গাছ পালা। ঝড়ের তান্ডবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অনেকের ঘরের চাল শিলা বৃষ্টিতে ছিদ্র ছিদ্র হয়ে গেছে। ভেঙে পড়া বিদ্যুতের খুঁটি মেরামত চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন স্বজনদের বাড়িতে।
বেতন্দর গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন ঝড়ের তান্ডবে ১০/১২ টি গাছ উপড়ে গেছে। ঘর ভেঙেছে তিনটি। শিলাবৃষ্টিতে প্রায় ধানের জমির ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। সরকারের সহযোগিতা না পেলে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে।
কবিরাজপাড় গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল খালেক বলেন শিলাবৃষ্টিতে আমার ১৫ কাঠা ধানের জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এগুলো থেকে আর ধান পাওয়া যাবে না। ধান না পেলে পরিবার নিয়ে খাবে কি।
কাওলাটিয়া গ্রামের আমেনা বলেন শিলাবৃষ্টির তান্ডবে ঘরের চালে অসংখ্য ছিদ্র হয়ে গেছে। পানি পড়ায় ঘরে থাকতে পারছিনা। এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। সবাই যদি সহযোগিতা না করে আমি কিভাবে ঘর মেরামত করবো।
আরও পড়ুন: রেলকর্মীদের ধর্মঘট প্রত্যাহার
বোকাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল মুক্তাদির শাহীন বলেন, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ইউনিয়নের ১২ টি গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনকে জানানোর পরেও এখন ক্ষতিগ্রস্তরা কেউ সহযোগিতা পায়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ বলেন ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো তথ্য নিতে পিআইওকে বলা হয়েছে। জনপ্রতিনিধার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর লিখিত দিলে সহযোগিতার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ফসলের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি কৃষি অফিস উদ্যোগ নিবে।
সান নিউজ/এনকে