এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ : কী যুগ আইলো অহন (আসলো এখন) মানুষ আল্লাহকে ডরায় না (ভয় পায় না),কিন্তু মানুষের ডরে (ভয়ে) দোকানে পর্দা লাগায়। এগুলো কেয়ামতের আলামত। এভাবেই কথা গুলো বলতে বলতে এক চায়ের দোকানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন ৭০ বছর বয়সী আব্দুল জলিল।
আরও পড়ুন: হুমায়ুন আজাদ হত্যা: ৪ জঙ্গির ফাঁসি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজার,চায়ের দোকান ও হোটেল গুলোতে ঝুলছে বাহারি রঙের কাপড়ের পর্দা। সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ পৌরবাজার,মাইজবাগ, উচাখিলা,আঠারবাড়ি, বড়হিত সূর্যের বাজার ও লক্ষীগঞ্জসহ গ্রামের প্রতিটি ছোট ছোট চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায় দিবালোকে পর্দার আড়ালে চলছে চা,পান,বিড়ি, সিগারেট,ভাতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের দৃশ্য।
এ বিষয়ে দোকান মালিকদের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা অনেকেই বলেন, পেটের দায়ে এভাবে রমজানে পর্দা টাঙিয়ে ব্যবসা করছেন। এভাবে ব্যবসা না করলে সংসার চলবে না।
এ ব্যাপারে পর্দার আড়ালে খাদ্যদ্রব্য খাওয়া ব্যক্তিদের নিকট জানতে চাইলে,তারা এবিষয়ে কথা বলতে নারাজ। প্রশাসনিকভাবে বিষয়গুলোতে নজর দেয়া জরুরি বলে মনে করেন আলেম সমাজ ও সচেতন মহলের লোকজন।
আরও পড়ুন: রেলকর্মীদের ধর্মঘট প্রত্যাহার
এবিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা মার্কাজ মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা যাইনুল আবেদীন বলেন, কোরআন ও হাদিসে এসেছে , 'তোমরা যাবতীয় অশ্লীল কাজ ও পানাহার থেকে নিজেকে বিরত রাখো।’ এ মাসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম ব্যক্তির ওপর সাওম পালন ফরজ। কিন্তু অসুস্থ, গর্ভবতী, ডায়াবেটিক রোগী,মুসাফির ও ঋতুবতী নারীদের ক্ষেত্রে তা শিথিল করা হয়েছে। রোজা বা সাওম হলো সুবহে সাদিক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, পঞ্চইন্দ্রিয়ের দ্বারা গুনাহের কাজ এবং (স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে) যৌনসংগম থেকে বিরত থাকা। এ মাসে মুসলিমগণ অধিক ইবাদত করে থাকেন। কারণ অন্য মাসের তুলনায় এ মাসে ইবাদতের সওয়াব বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে । এ মাসের লাইলাতুল কদর নামক রাতে কুরআন নাজিল হয়েছিল, যে রাতকে আল্লাহ তাআলা কুরআনে হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম বলেছেন। পবিত্র ধর্ম ইসলামে রোজা ভঙ্গকারীর জন্য শাস্তির কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে যদি কেউ রোগাক্রান্ত ব্যক্তি(অর্থাৎ যিনি রোজা রাখতে অক্ষম),মুসাফির ব্যক্তির কাছে খাবার বিক্রি ও খাওয়ানোর জন্য দোকানে পর্দা ব্যবহার করে তাহলে তা জায়েয। আর যদি রোজা রাখতে সক্ষম ব্যক্তি (অর্থাৎ যাদের উপর রোজা ফরজ) এমন ব্যক্তিদের জন্য খাবার, তৈরি, বিক্রি ও খাবারের জন্য পর্দা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ হারাম।
সাননিউজ/এমআরএস