বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও: খাবার থালায় চুল পাওয়াকে কেন্দ্র করে মামুন নামে এক পায়ন্ড স্বামী তার স্ত্রী সবুরা খাতুনকে (৩০) বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে। এতেও রাগ সংবরণ না হওয়ায় কাচি দিয়ে স্ত্রীর মাথার চুল কেটে দিয়ে ন্যাড়া করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন : সংকট আরও গভীর শ্রীলঙ্কায়
এ ঘটনায় নির্যাতিতা স্ত্রী থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু না করে দন্ডবিধিতে মামলা রুজু করেছে। গত ৭ এপ্রিল রুহিয়া থানা পুলিশ ওই মামলা রুজু করে।
পুলিশ জানায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ২১নং ঢোলারহাট ইউনিয়নের মাধবপুর নওয়াপাড়া গ্রামের মৃত মহির উদ্দীনের ছেলে এহসান মামুন (৩৫) ১৩ বছর আগে পার্শ্ববর্তী বোয়ালিয়া গ্রামের হামিদুল ইসলামের মেয়ে সবুরা খাতুনকে (৩০) বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য মামুন তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল।
এদিকে গত ১৭ মার্চ দুপুরে ভাত খাওয়ার থালায় চুল পাওয়াকে কেন্দ্র করে মামুন বাঁশের লাঠি দিয়ে স্ত্রী সবুরাকে বেধড়ক মারপিট করে।এতে সে জখম হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে স্বামী মামুন কাচি দিয়ে তার চুল কেটে দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেয়। তারপরও দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা কথা চিন্তা করে স্ত্রী সবুরা মামুনের সঙ্গে সংসার করতে থাকে।
এদিকে গত বুধবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে সবুরা তার একজন প্রতিবেশির সঙ্গে কথা বলার সময় মামুন বাড়িতে ফিরে এবং প্রতিবেশির সাথে কথা বলার অপরাধে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। একপর্যায়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে সারা শরীরে এলোপাথাড়ি মারধর করে। এসময় স্ত্রীর নাক হতে নাকফুল ও হাতের গহনা খুলে নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
আরও পড়ুন : টাঙ্গাইলে ট্রেনের ধাক্কায় শিশুসহ নিহত ৩
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় স্ত্রী সবুরা খাতুন স্বামী মামুনের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।কিন্তু পুলিশ উক্ত অভিযোগ মামলা হিসেবে রুজু না করে দন্ডবিধি আইনের ৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৫০৬ ধারায় একটি মামলা রুজু করে।
নির্যাতনের বিষয়ে ওই গৃহবধূ বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার স্বামী আমাকে প্রায় সময় অমানবিক নির্যাতন করে। শুধু সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সংসার করছি। মামুন আমার পরিবারের কাছ থেকে এর আগে ৩০ হাজার টাকা যৌতুক নিয়েছে।
এখন আবারও টাকার জন্য মা-বাবার কাছে বলার জন্য আমাকে চাপ দেয়। আমার বাবা অনেক গরিব। টাকা চাইতে আপত্তি করায় মামুন আমাকে মারধর করে মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসেন আলী বলেন, এহসান মামুন মারধর করে তার স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে। এর আগেও অনেকবার তার স্ত্রীকে নির্যাতন সে করেছে। আমরা স্থানীয় লোকজন তাদের বিচার করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েিিছ।
আরও পড়ুন : টাঙ্গাইলে ট্রেনের ধাক্কায় শিশুসহ নিহত ৩
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র রায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার কার্যালয়ে গেলে তিনি কথা না বলে সাংবাদিকদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
রুহিয়া থানার ওসি চিত্ররঞ্জন রায় বলেন, সবুরা খাতুন নামে এক গৃহবধূ স্বামী নির্যাতনের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এনকে