মো কামরুল হোসেন সুমন, স্টাফ রিপোর্টার: ভোলা ও লক্ষ্মীপুর পয়েন্ট এর মেঘনা নদীতে লক্ষ্মীপুর নৌ পুলিশের সাথে সংঘর্ষে আমির হোসেন নামের এক জেলের মৃত্যু ও জাহাঙ্গীর নামে এক জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন : পাকিস্তানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ
নিহত জেলে আমির হোসেন (২৫) ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ৩নং ওয়ার্ডের মতলব রাঢ়ীর ছেলে এবং গুলিবিদ্ধ জাহাঙ্গীর ও ওই এলাকার বাসিন্দা।
নিহত আমির হোসেন এর স্ত্রী সুরভী বেগম জানান, আমার স্বামী আমাদের এলাকার মনির চকিদারের ট্রলারে শনিবার বিকালে মাছ শিকারের জন্য মেঘনা নদীতে যান, সেখান থেকে রাতে একজনে ফোন দিয়ে বলেন কালিগঞ্জের জাইল্লার (জেলে) সাথে মারামারি হইছে পরে নৌ পুলিশ তাদের গুলি করছে, এখন তাদের সবাইকে ধরে নিয়ে গেছে নৌ পুলিশ।
পরে আমার আত্মীয়স্বজন খবর নিয়ে জানতে পারে লক্ষ্মীপুরের নৌ পুলিশ নদীতে আমার স্বামীকে গুলি করে আবার তারাই চিকিৎসা করাতে নিয়ে গেলে ঢাকা মেডিকেলে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন : সংকট আরও গভীর শ্রীলঙ্কায়
স্বামীর মৃত্যুর কথা বলতে গিয়ে একমাত্র প্রতিবন্ধী সন্তান কোলে নিয়ে বারবার জ্ঞান হারান সুরভী, দাবী করেন স্বামী হত্যাকারীদের সব্বোর্চ শাস্তি যেন হয়।
নিহত আমিরের অসুস্থ বাবা ও মা বার বার অজ্ঞান হয়ে যান আর শুধু বলেন আমাগো রে এখন ভাত কাপড় দিবে কে? এদিকে আমিরকে হারিয়ে এবং গুলিবিদ্ধ জাহাঙ্গীর ও পুলিশে আটক করা ১০ জেলের পরিবারসহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন : ধর্ষণ আইন সংশোধনে হাইকোর্টের রুল
এই বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলার মজুচোধুরী ঘাট নৌ পুলিশের ইনচার্জ কামাল হোসেন বলেন আমি কিছুই জানিনা তবে আমাদের টিম গতকাল রাতে নদীতে গিয়েছে, নৌ ইনচার্জ এর এমন বক্তব্যতে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়, নৌ পুলিশের এমন একটি ঘটনা ফাঁড়ির ইনচার্জ জানবে না, এটা কি ভাবে সম্ভব? নাকি জেনেও তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।
তবে পুলিশের গুলিতে জেলে নিহত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে চাঁদপুর অঞ্চল নৌপুলিশের এসপি মো. কামরুজ্জামান জানান, লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর ঘাট এলাকার মেঘনা নদীতে জেলেরা নৌপুলিশের ওপর হামলা করে। এ সময় জেলেদের ইটপাটকেল ও লগি বৈঠার আঘাতে নৌপুলিশের বেসরকারি মাঝিসহ পাঁচজন নৌপুলিশ আহত হয়েছেন। পরে আত্মরক্ষার্থে নৌপুলিশ বারার বুলেট ছোঁড়ে।
আরও পড়ুন : বিক্ষোভে উত্তাল পাকিস্তান
তিনি আরও জানান, জেলে নৌকার ১১ জনকে আহত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। এদের মধ্যে একজনের মাথায় গুরুতর আঘাত থাকায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সে মারা যায়। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। চিকিৎসাধীন ১০ জেলেকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান নৌপুলিশের এ কর্মকর্তা।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকতা সরোয়ার জামান জানান, গতকাল আমাদের কোন প্রতিনিধি নৌ পুলিশের সাথে নদীতে যাইনি।
সান নিউজ/এনকে