বিভাষ দত্ত, ফরিদপুর : ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী মধুমতী নদী নাব্য হারিয়ে মরে যেতে বসেছে। নদীর পার ভেঙ্গে বালু ও পলি জমে ক্রমশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর তলদেশ। কমে যাচ্ছে পানির প্রবাহ। নদীর বুকে জেগে উঠছে নতুন নতুন চর। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এই নদীর চর জবরদখলে নিয়ে এখন করছেন চাষাবাদ।
আরও পড়ুন: এ বছর হজের খরচ বাড়তে পারে
উপজেলার মধ্যে দিয়ে চন্দনা ও মধুমতী বয়ে চলছে। চন্দনা মধুমতিতে গিয়ে মিশলেও সেখানেও রয়েছে পানি সংকট। নদীর দু'পাশে এখন শুধু চাষাবাদেই ব্যবহৃত হচ্ছে। অনেক স্থানে নদীর জায়গা ভরাট ও দখল করে তৈরি হয়েছে বাড়িঘর ও দোকান পাট।
স্থানীয়রা জানান, এক সময় দুটি নদীতেই পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ ছিল। তা দিয়ে চাষাবাদ করার পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু নদীর তলদেশে পলি জমে বিস্তীর্র্ণ এলাকা জুড়ে জেগে উঠেছে বিশাল চর। অনেকে আবার নদীর কিছু জায়গা ভরাট করে বসতবাড়ি গড়ে তুলেছেন।
নদীর অভয়াশ্রমে এখন আর তেমন মাছ পাওয়া যায় না। মধুমতি ও চন্দনা নদী একসময় ছিল প্রবল খরস্রোতা এবং নদী পাড়ের মানুষের কাছে ছিল মূর্তিমান আতঙ্ক। কিন্তু বর্তমানে এ দুটি নদী নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় বর্ষাকালে এর ভয়াল রূপ আর চোখ পড়ে না। যদিও চন্দনা নদী একবার খনন করায় কিছুটা পানি থাকলেও নদীর দুপাশে ফসল চাষ করা হয়।
প্রমত্তা মধুমতী নদীর ঢেউ এখন শুধুই স্মৃতি। উপজেলার পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবাহিত এ নদীপথে শিল্পনগরী খুলনা, বৃহত্তর বরিশাল এবং রাজধানী ঢাকায় খুব সহজেই যাতায়াতের সুযোগ ছিল।
এক সময় পণ্যবাহী বড় বড় জাহাজ এ নদীপথে দেশের বিভিন্ন নৌবন্দরে নিয়মিত আসা-যাওয়া করত। কিন্তু বর্তমানে হরিনাডাঙ্গা, মিটাইন, নওপাড়া, কামারখালী ঘাট এলাকাতে নদীবক্ষে বিশাল চর পড়ার কারণে একেবারেই নাব্য হারিয়ে ফেলেছে। নাব্য কমে যাওয়ায় ক্রমান্বয়ে মরে যাচ্ছে মধুমতী।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের রেল স্টেশনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৫২
শুকিয়ে যাচ্ছে নদী ও আশপাশের খালবিল। স্বাভাবিক পানির অভাবে ব্যাহত হচ্ছে সেচকাজ। উপজেলার সীমান্তবর্তী কামারখালী, সালামতপুর, নওপাড়া দিয়ে প্রবাহিত মধুমতি নদীটি এখন পরিণত হয়েছে আবাদি ক্ষেতে। যে নদী একসময় ভেঙেচুরে গ্রাস করেছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, মসজিদ-মন্দির ক্ষেত-খামার ও গাছপালা, সেই রাক্ষুসী নদী এখন চরাঞ্চলে পরিণত হয়েছে।
সাননিউজ/এমআরএস