এম.এ আজিজ রাসেল, কক্সবাজার : বাজার থেকে প্রতি কেজি প্যাকেটজাতকরণ লবণ কিনতে হয় ২৫ টাকা দামে। অথচ চাষীদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা সেই লবণ কিনছে কেজি প্রতি ৫ টাকা দরে। ক্রেতা ও প্রান্তিক চাষীদের মাঝখানে লবণ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আর অসহায় ও গরীব কৃষকরা চাহিদা মোতাবেক লবণ উৎপাদন করেও লাভের মুখ দেখছেনা। লোকসানে পড়ে দেনায় ডুবে যাচ্ছে তারা।
আরও পড়ুন : বিশ্ব সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে লবণের চাষ হয়। তার মধ্যে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে গড়ে উঠা মহেশখালী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লবণ উৎপাদিত হয়। এ উপজেলায় বসবাসরত জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি মানুষ লবণ চাষের সাথে জড়িত। তাদের অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ হয় লবণ বিক্রি করেই। তাই লবণ মৌসুমের পূর্বে জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদের কাজ শুরু করেন।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, চলতি লবণ মৌসুমে প্রতি কানি জমি লাগিয়ত হয়েছে ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকায়। প্রতি কানিতে পলিথিন বাবদ খরচ হয় প্রায় ৫ হাজার টাকার। এর বাইরে শ্রমিক খরচ সহ অন্যান্য খরচ মিলে প্রতি কানি জমিতে প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হয় বলে কৃষকরা জানান।
আবদুল গফুর নামের এক কৃষক বলেন, “লবণ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করেই এ দাম কমিয়েছে। এটি অনেকটা ফাঁদ পাতার মত। আমাদের মত দরিদ্র কৃষকদের অসহায়ত্ব ও প্রয়োজনকে পুঁজি করে মাঠ থেকে কম দামে লবণ কিনে ব্যবসায়ীদের ঐ সিন্ডিকেট শহরে গিয়ে চড়া দামে বিক্রি করছে। সংসারের খরচ যোগানো ও দেনা পরিশোধে বাধ্য হয়ে লবণ বিক্রি করতে হয় আমাদের।”
আরও পড়ুন : জনগণই সব ক্ষমতার উৎস
আনোয়ার মোস্তাফা নামের অপর কৃষক বলেন, প্রতি কেজি লবণ উৎপাদনে প্রায় ৬ টাকা খরচ হয়। কিন্তু সেই লবণ বিক্রি করছি ৫ টাকায়। শ্রমের টাকা পাচ্ছিনা। তার উপর লোকসান দিয়েই লবণ বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্য কোন কাজ নেই। তাই বাধ্য হয়ে লবণ চাষ করছি।
যদিও কৃষকদের অভিযোগের মুখে ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা জানান, সিন্ডিকেট করে লবণের দাম কমানো হয়নি। লবণ মিল মালিকরা যে দামে লবণ কিনে তার সাথে সমন্বয় করেই প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে লবণ ক্রয় করি।
আরও পড়ুন : ৩ সেপ্টেম্বর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরু
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে দেশে লবণের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন। বিসিকের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, সব উপজেলায় লবণ উৎপাদনে মাঠে নেমেছেন চাষিরা। এরই মধ্যে বিপুল পরিমাণ লবণও উৎপাদিত হয়েছে।
সান নিউজ/এইচএন