মো কামরুল হোসেন সুমন, ভোলা: ভোলার মনপুরায় প্রতিনিয়ত চুরি হয়ে যাচ্ছে কৃষকের গরু-মহিষ। গত কয়েকদিনে ২৯ কৃষকের ৭০ গরু-মহিষ প্রভাবশালীদের মদদে চুরি করে নিয়ে যায় একটি চক্র। এতে একের পর এক মহিষ ও গরু চুরি হয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। চুরি হওয়া গরু-মহিষের বর্তমান বাজার মূল্য ৫ কোটি টাকার ওপরে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক।
আরও পড়ুন: তরমুজ বিক্রি নিয়ে ক্ষুব্ধ ওমর সানী
এর মধ্যে বুধবার নুরনবী নামে এক কৃষকের ৫ টি গরু সংঘবদ্ধ চক্রটি চুরি করে নিয়ে গেলে থানায় মৌখিক অভিযোগ জানায় ক্ষতিগ্রস্থ ওই কৃষক। এর আগে মঙ্গলবার তাজল নামে অপর কৃষকের চর নজরুল থেকে ৩ টি মহিষ চুরি করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ ওই চক্রটি। পরে ওই কৃষক দিশেহারা হয়ে থানায় জিডি করতে গেলে মামলার পরামর্শ দেন পুলিশ। পরে চক্রের ভয়ে তিনিও মামলা করেননি।
কৃষকরা জানান, প্রভাবশালী মহলের মদদে একটি চক্র রাতের বেলায় মূল ভূ-খন্ড ও বিভিন্ন চরাঞ্চলে থাকা গরু-মহিষ চুরি করে ট্রলারে করে হাতিয়ার ৪ নম্বর ঘাট হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার করে। তবে তারা (কৃষকরা) হেনস্তার ভয়ে ওই প্রভাবশালী সংঘবদ্ধ চক্রটির নাম বলতে রাজি নন। এমনকি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ফের গরু-মহিষ চুরি করে নিয়ে যাওয়ার হুমকিতে মামলা করছে না। তবে সংঘবদ্ধ চক্রটি বিরুদ্ধে পুলিশ যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয় তারও দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা।
জানা যায়, মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চর নজরুল, সোনার চর ও বদনার চরে মনপুরার কৃষকরা বাতানদের (‘বাতান’ বলতে গরু-মহিষ দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে বুঝায়) মাধ্যমে গরু-মহিষ লালন-পালন করে। গত কয়েকেদিনে চর নজরুলে থাকা কৃষক মতিনের ১ টি মহিষ, দীপকের ৩ টি মহিষ ও ৩ টি গরু, তাজলের ৩ টি মহিষ, স্বপনের ৫ টি মহিষ চুরি হয়।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
সোনার চর থেকে কৃষক জয়দেবের ৩ টি গরু, শিমুল দাসের ১ টি গরু, পরিমলের ১ টি গরু, মিজানের ২ টি গরু, জাকির, সেকান্দার ও বেচুর ১ টি করে ৩ টি গরু, শুভাষের ১ টি গরুসহ ওই চর থেকে এক রাতে ১১ টি গরু চুরি করে করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চক্রটি।
এছাড়াও বদনার চর থেকে ফারুক মেম্বারের ৩টি মহিষ, শামসুদ্দিনের ২ টি গরু, কিরনের ৩টি, ছালাহউদ্দিনের ৫ টি, জিয়া উদ্দিনের ১ টি, কামালে ২টি, মহিউদ্দিনের ২ টি, মাইনুদ্দিন বেপারীর ২ টি, লতিফের ৩ টি, রহিমের ১টি ও রবিউলের ১ টি সহ মোট ২৭ টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চক্রটি।
আরও পড়ুন: কফি আনানের জন্ম, বঙ্কিমচন্দ্রের প্রয়াণ
এ ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদ আহমেদ জানান, গরু-মহিষ চুরি হওয়ার খবর কৃষকের কাছ থেকে পাচ্ছি। মামলা করতে বললে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মামলা করছেন না। তারপরও আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা জানান, হঠাৎ করে গরু-মহিষ চুরি বেড়ে গেছে। প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মৌখিক অভিযোগ দিচ্ছে। দ্রুত সংঘবদ্ধ চক্রটি ধরতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/এমকেএইচ