এম.এ আজিজ রাসেল, কক্সবাজার : সময়ের হিসেবে শেষ হয়েছে পর্যটন মৌসুম। তার উপর এসেছে রমজান। এ কারণে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে দেশের পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার! পহেলা রমজান থেকে এক প্রকার জনশূন্য হয়ে আছে কক্সবাজারের পর্যটন স্পটগুলো। পর্যটক না থাকায় মেরামত ও নতুন করে সাজসজ্জার কাজ শুরু করেছে অধিকাংশ হোটেল, মোটেল— কটেজ ও রেস্টুরেন্টগুলো। একই সাথে ছাঁটাই করা হয়েছে কর্মচারীও।
আরও পড়ুন : আমি ব্যবসায়ী এটাই আমার অপরাধ
জানা গেছে, রমজানের শুরু থেকে পর্যটক নেই কক্সবাজারে। তাই পর্যটন জোন কলাতলীর হোটেল, মোটেল ও কটেজ গুলোর বুকিংও শূন্য। একইভাবে পর্যটন জোনের সব ধরণের রেস্টুরেন্টও ভোক্তা শূন্য। ভোক্তা না থাকায় বহু রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
কলাতলীর স্বপ্নালয় স্টুডিও এ্যাপার্টমেন্টের ইনচার্জ কুতুব উদ্দীন জানান, তাদের হোটেলে ৬০টি কক্ষ (ফ্ল্যাট) রয়েছে। তার মধ্যে দুটি মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া রয়েছে। বাকি যে ৫৮টি কক্ষ রয়েছে সবগুলো রোজার শুরু থেকে বুকিং শূন্য রয়েছে।
একই কথা জানিয়ে গ্র্যান্ড সেন্ডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রহমান বলেন, এপ্রিল থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক গমণ বন্ধ ঘোষণা করায় হুট করে কক্সবাজারে কক্সবাজারে পর্যটক আগমণ হঠাৎ শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। তার উপর সাথে সাথে এসেছে রমজান। তাই কক্সবাজারে একেবারে পর্যটক নেই। তাই ৯০ শতাংশ হোটেল, মোটেল বুকিং শূন্য রয়েছে।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশের সরকারি ওষুধ ভারতে বিতরণ!
পর্যটক না থাকায় বুকিং নেই, তাই এসময়কে মেরামত ও পরিস্কার—পরিচ্ছন্নতাসহ সাজসজ্জার মোক্ষম সময় হিসেবে নিয়েছেন মালিকেরা। আগামী মৌসুমের উপযোগী করতে এখন অধিকাংশ হোটেল, মোটেল ও কটেজ এবং রেস্টুরেন্টে মেরামত ও পরিস্কার—পরিচ্ছন্নতাসহ সাজসজ্জার কাজ চলছে।
হোটেল আইল্যান্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূরুল কবির পাশা বলেন, ‘পুরো রমজান মাস পর্যটক আসবে না। ফলে বুকিং শূন্য থাকবে সব কক্ষ। এখন হোটেলকে নতুন রূপে তৈরি উপযুক্ত সময়। তাই হোটেলের কক্ষগুলো একটি বড় পরিস্কার—পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। একই সাথে ফ্রন্ট ডেস্ক থেকে শুরু করে বাহ্যিক স্থানগুলোকে পরিস্কার—পরিচ্ছন্ন ও নতুন করে সাজানো হচ্ছে।
রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল বলেন, রমজানে অন্যান্য স্থানের ইফতারি ও সেহরির বেচাকেনা হলেও পর্যটকন এলাকায় তা একেবারে হয় না। তাই অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। গুটিকয়েক রেস্টুরেন্ট খোলা রয়েছে যে গুলোতে স্থানীয় লোকজন ইফতার করতে যায়। বন্ধ রাখা রেস্টুগুলো নতুন করে পরিস্কার—পরিচ্ছন্ন ও সাজসজ্জা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : কুয়েত সরকারের পদত্যাগ
কক্সবাজার হোটেল—মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, স্বাভাবিকভাবে রমজান মাসে পর্যটক তেমন থাকে না। এবার কিন্তু পর্যটক শূন্যতা বেশি দেখা যাচ্ছে। ফলে সব ধরণের হোটেল—মোটেল ও গেস্ট হাউসে বুকিং শূন্য রয়েছে। তবে পর্যটন মৌসুম শেষ হলেও রমজানের পরে ঈদে বেশ পর্যটক আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন হয়তো কয়েকদিন ব্যবসা ভালো হবে। সে আশা নিয়ে রমজানে হোটেল—মোটেল, গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
শুধু হোটেল—রেস্টুরেন্ট নয়; রমজানের কারণে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলোও বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে সৈকত এলাকার ঝিনুক, আচার, মাছ ফ্রাই এবং কাপড়ের দোকানগুলো ৯০ শতাংশ বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন : চাঁদাবাজি রোধে কঠোর অবস্থানে পুলিশ
লাবণী পয়েন্ট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাবিব উল্লাহ বলেন, রমজানের পর্যটক না থাকায় বেচাকেনা হয় না। তাই দোকান বন্ধ রাখা রয়েছে। তবে ঈদের পরে ব্যবসার জন্য ২০ রমজানের পর থেকে নতুন করে মালামাল উঠানোসহ প্রস্তুতি নেয়া হবে।
হোটেল—মোটেল কর্মকর্তা—কর্মচারী এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, পর্যটক না থাকায় বহু হোটেল—কটেজে কর্মচারী ছাঁটাই করে। এতে পুরো রমজান ও ঈদে পরিবার—পরিজন নিয়ে বেশ কষ্ট পাবে তারা।
সান নিউজ/এইচএন