কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসভার নতুন বাসস্ট্যান্ড হতে ফায়ারসার্ভিস পর্যন্ত মাঝকান্দি ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের দু পাশের সড়ক ও জনপথের জায়গায় অবৈধ ঘর উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কতিপয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন : অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ
চৌরাস্তায় সরকারি জায়গায় বারোটি ঘর তুলে এক প্রভাবশালী কর্তৃক প্রতি মাসে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ভাড়াটিয়াদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা অগ্রিম নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
তবে গত শনিবার (০৩.০৪.২২) অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) কঠোর অবস্থান গ্রহণ করায় চৌরাস্তাসহ সড়কের দুই পাশের ওই ঘরগুলো অপসারণে বাধ্য হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন ঘরের ভাড়াটিয়ারা।
আরও পড়ুন : আজ থেকে ব্যাংক লেনদেন পাঁচ ঘণ্টা
সরকারি জায়গায় ঘর তুলে বছরের পর বছর মোটা অংকের অগ্রিম (এডভান্স) এবং মাসিক ভাড়া আদায়কারী হলেন, পৌরসভার সাবেক কমিশনার শেখ আতিকুল ইসলাম, রাজবাড়ী জেলার খানখানাপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পৌরসভার ছোলনা গ্রামের মৃত আমীরুল ইসলাম চৌধুরীর শ্যালক আমীর হোসেন, আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির বাবু হাদি, পরিবার পরিকল্পনা অফিসের অবসর প্রাপ্ত কর্মচারী আবজাল মোল্যা, আলফাডাঙ্গা উপজেলার গরানিয়া গ্রামের খান আতিকুল ইসলাম ও তার জামাই, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি স্তম্ভের পাশে মো. ফজলু মিয়া, পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের পাশে সড়ক ও জনপথের জায়গায় ৮/১০টি দোকান ঘর নির্মাণ করে লাখ লাখ টাকা মাদ্রাসার নামে হাতিয়ে নিয়েছেন মাদ্রাসা পরিচালানা পর্ষদের সহ-সভাপতি বেনু মিয়া ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম।
আরও পড়ুন : রমজানের পবিত্রতা রক্ষার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জানা গেছে, ফরিদপুর জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন ধরে মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য মাইকিং করা হচ্ছিল।
গত ১ এপ্রিল দখলদারদের নিজেদের অবৈধ স্থাপনা ভেঙে নেয়ার শেষ দিন বেধে দেয়া হয়েছিল। সওজের কঠোর অবস্থানের কারণে বোয়ালমারী পৌরসভার নতুন বাসস্ট্যান্ড হতে ফায়ারসার্ভিস পর্যন্ত গড়ে ওঠা ঘরগুলো ভাঙা পড়ায় বেকায়দায় পড়েছেন দোকানগুলোর ভাড়াটিয়ারা। অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের ব্যবসা।
ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে প্রথমে আমীরুল ইসলাম চৌধুরী, তার মৃত্যুর পর শ্যালক আমীর হোসেন স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় চৌরাস্তায় সরকারি জায়গায় স্থাপিত ওই সব ঘর থেকে এডভান্স এবং মাসিক ভাড়া আদায় করতেন।
আরও পড়ুন : ব্রাজিলে ভূমিধসে নিহত ১৪
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চৌরাস্তায় স্থাপিত চা দোকানদার জুয়েলের নিকট থেকে প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ দুই হাজার টাকা, ফল ব্যবসায়ী শাজাহান বিশ্বাসের নিকট থেকে ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে বারো হাজার টাকা, অপর ফল ব্যবসায়ী মফিজুর রহমানের নিকট থেকে প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ পাঁচ হাজার টাকা, হোটেল মালিক চান মিয়ার নিকট থেকে প্রতি মাসে আট হাজার টাকা, পুরনো বই ব্যবসায়ী মিন্টু মোল্যার নিকট থেকে প্রতি মাসে দুই হাজার, পানের দোকানদার নাসিরের নিকট থেকে প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা, ফুটপাতে বসে পান-সিগারেট বিক্রেতা বাকা মোল্যার নিকট থেকে দেড় হাজার টাকা, ফল ব্যবসায়ী ইদ্রিসের নিকট থেকে দুই হাজার টাকা, রসের দোকানদার আরমানের নিকট থেকে পাঁচশ টাকা, ফলের দোকানদার আমজেদের নিকট থেকে আটশ টাকা এবং আনন্দের নিকট থেকে দশ হাজার টাকা আদায় করতেন।
আরও পড়ুন : মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ৪৪
এ ব্যাপারে ঘরের ভাড়াটিয়া ফল ব্যবসায়ী শাজাহান বিশ্বাস বলেন, আমি এখানে ১৪/১৫ বছর ধরে ভাড়া আছি। শুরুতে ১৩/১৪ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছি। এখন প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা করে ভাড়া দেই রাজবাড়ী জেলার খানখানাপুরের বাসিন্দা আমীর হোসেনকে। ফুটপাতের পান-সিগারেট বিক্রেতা বাকা মোল্যা আক্ষেপ করে বলেন, আমার নিকট থেকেও প্রতি মাসে দেড় হাজার টাকা করে ভাড়া আদায় করতেন আমীর হোসেন।
সান নিউজ/এইচএন