নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কবিরহাটের ধানশালিক ইউনিয়নের চাপরাশির খালের ওপর ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন চরএলাহী ব্রিজের স্টেজিং বালুবাহী বলগেটের আঘাতে ভেঙ্গে পানিতে তলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ভাসানচর পৌঁছাল আরও ১৫৩৫ রোহিঙ্গা
এছাড়াও এর আগেও তিনবার বালুবাহী বলগেটের আঘাতে ব্রিজের দুইটি গার্ডারে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের চাপরাশি খালের উপর নির্মাণাধীন চরএলাহী ব্রিজে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।
নোয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বসুরহাট বাজার থেকে চরএলাহী বাজারের সাথে সরাসরি যোগাযোগের লক্ষ্যে ২০২০ সালের ১৫ডিসেম্বর সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৭ মিটার দৈর্ঘ্য এ ব্রিজের নির্মাণের কাজ শুরু করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডাস মাহমুদুর রহমান এর কাজটি করছে।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো.ইউছুফ ইউহানা বলেন, চাপরাশিরহাট ও কবিরহাট উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের অসাধু বালু ব্যবসায়ী খুরশিদ,শাহজাহান ও সোহেল অবৈধ ভাবে কোন সেফটি ছাড়া বলগেটে করে চাপরাশি খালে বালু নিয়ে আসে। এরপর সেফটি ছাড়া বলগেট টাকে যেনতেন ভাবে রেখে যায়। এরপর বলগেট গুলো জোয়ারে ভেসে এসে নির্মাণাধীন ব্রিজের গার্ডার ক্ষতিগ্রস্থ করে এবং স্টেজিং ভেঙ্গে পানিতে তলিয়ে নিয়ে যায়। এ ব্রিজটা এখন হুমকির মুখে আছে।
বড় গার্ডারটা যে কোন মুহূর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে। আজকের ঘটনায় প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর আগেও তৎকালীন কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসিনা আক্তারকে জানানো হয়েছে কাজ চলাকালীন বলগেট চলাচল বন্ধ করার জন্য। কিন্তু অভিযুক্তরা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বালু উঠিয়ে বলগেট চালানো অব্যাহত রেখেছে।
ম্যানেজার ইউছুফ আরও জানান, এখন পর্যন্ত নির্মাণাধীন ব্রিজের ৭টা গার্ডারের এর কাজ করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এ খালে প্রচণ্ড স্রোত এবং বালুবাহী জাহাজ অদক্ষ চালকের কারণে আরও ৩বার নির্মাণাধীন গার্ডার গুলোকে আঘাত করে। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসিনা আক্তারকে জানানো হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বরং ইউএনও দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবেনা। কিন্তু তারপরও ঘটেছে।
আরও পড়ুন: উলিপুরে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
এ বিষয়ে জানতে কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আতিকুল মামুনের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে নোয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড.মোহাম্মদ আহাদ উল্যাহ বলেন, বিষয়টি জেনে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.নিজাম উদ্দিন সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি আরও বলেন একাধিকবার বালুবাহী বলগেট নির্মাণাধীন ব্রিজের স্টেজিংয়ে আঘাত করায় আগামী বর্ষার আগে কাজটি সন্তোষজনক পর্যায়ে আনা কষ্টকর হয়ে পড়বে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান আরও বলেন বিষয়টি আমি জেনেছি। ব্রিজটি কোম্পানীগঞ্জ এবং কবিরহাট উপজেলার বর্ডার এলাকায়। দুই কিলোমিটার দূরে বেধে রাখা বালুবাহী বলগেট জোয়ারের পানিতে ভেসে এলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এনকে