রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার): দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বেওয়ারিশ কুকুর। এমন অভিযোগ দ্বীপের বাসিন্দা ও দ্বীপে দেশি-বিদেশি ভ্রমণকারী পর্যটকদের। বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ দ্বীপে আসা পর্যটক ও দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: টার্গেট ছিল টিপুকে হত্যা, প্রীতি নয়
প্রায় ১০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দ্বীপে চার হাজারের বেশি কুকুর রয়েছে বলে স্থানীয় লোকজনের দাবি ছিল। এই বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ে বেশ কয়েকবার নিউজ ও করা হয়েছে। এ বেওয়ারিশ কুকুর দ্বীপে থাকবে কিনা থাকবে উপজেলা প্রশাসন অনেকবার আলোচনা করছিল।
এ পরিকল্পনা অনুযায়ী রোববার (২৭ মার্চ) বিকেলে সেন্টমার্টিন সৈকত থেকে কুকুর পুনর্বাসনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী।
উপজেলা পরিষদ ও প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহতায় এ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন সদ্য যোগদানকারী ইউএনও কাইছার খসরু, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহিব উল্লাহ, এমওডিসি ডা. প্রণয় রুদ্র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে রিট
ইউএনও পারভেজ চৌধুরী জানান, সেন্টমাটিনে কুকুর বৃদ্ধি পাওয়ায় ভ্রমণে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ স্থানীয়দের কামড় দেওয়াও ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। এছাড়া সৈকতে ডিম পাড়তে আসা কচ্ছপগুলো হুমকির মুখে রয়েছে। ফলে সুন্দর উপায়ে দ্বীপ থেকে কুকুর পুনর্বাসন কাজ শুরু করা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, আমাদের চেষ্টা থাকবে দ্বীপ থেকে অন্তত অর্ধেক কুকুর সরানো। কুকুরগুলো সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফের মূল ভূখণ্ডের সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, ঘোলারচর ও বাহারছড়াসহ উপজেলায় বিভিন্ন জায়গায় পুনর্বাসন করা হবে, যাতে কুকুরগুলোও অভুক্ত না থাকে।’
আরও পড়ুন: সৈয়দপুরে রেল লাইনের যন্ত্রাংশ উধাও
দ্বীপবাসী জানায়, সেন্টমার্টিনে ১০ হাজার মানুষের বসবাসের পাশপাশি প্রতিদিন কয়েক হাজার পর্যটকদের আনাগোনা। কিন্তু দ্বীপে বেওয়ারিশ কুকুর আছে ৩-৪ হাজারের বেশি। ফলে প্রতিনিয়ত পর্যটক ও সাধারণ মানুষ কুকুরের আতঙ্কে রয়েছেন। ২ মাসে প্রায় শতাধিকের বেশি পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন। বিশেষ করে সৈকতে ডিম পাড়তে আসা কচ্ছপসহ হাঁস, মুরগি, মাছ খেয়ে ফেলছে কুকুর।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহিব উল্লাহ জানান, ‘এতো সংখ্যক কুকুরকে একসঙ্গে কোনো একটি অঞ্চলে ছেড়ে দেওয়া হলে সেখানে অবশ্যই খাদ্যসংকট দেখা দেবে। ফলে কুকুরগুলোকে স্থানান্তরিত করার পরও যাতে খাবারের সংকট তৈরি না হয় তার জন্য সেগুলোকে জনপদ অর্থাৎ যেখানে মানুষের বসবাস রয়েছে তেমন কোনো এলাকায় নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। প্রথম দিনে দ্বীপ থেকে ৩০টি খাঁচার ভেতরে কুকুর নিয়ে ট্রলারে করে টেকনাফে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: তাহসান-মিথিলা-ফারিয়াকে অব্যাহতি
এদিকে, ২০১৪ সালে একটি বেসরকারি সংস্থার রিট আবেদনের প্রেক্ষাপটে কুকুর নিধন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এতে কুকুর নিধন কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে কুকুরকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার কাজ শুরু করে। সর্বশেষ রোববার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেন্টমার্টিন থেকে কুকুর পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা হয়।
সান নিউজ/এমকেএইচ