শফিক স্বপন, মাদারীপুর: মাদারীপুরে পুলিশের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার্থী সানি ব্যাপারীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে তার দাবি পরিবারের। এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে দাও অভিযুক্তদের বিচার ও ওই শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবি করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
আরও পড়ুন: সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আর নেই
সানি ব্যাপারী (১৬) কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ফাসিয়াতলা এলাকার কুদ্দুস ব্যাপারীর ছেলে এবং কালিনগর ফাসিয়াতলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সানির পরিবার অভিযোগ করে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি খুন হন কৃষকলীগ নেতা মানিক সরদার। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সীমা খানম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করে।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে ট্রাকচাপায় নিহত ৩
এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এসআই হিমেল মোবাইলে কল দিয়ে আসতে বললে গত সোমবার রাত ৯টার দিকে সানিকে সাথে নিয়ে মাদারীপুর জেলার গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে হাজির হন পরিবারের লোকজন।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরদিন সকালে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও বুধবার সানিকে মাদারীপুর পৌর এলাকা থেকে গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত সানিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যু কমেছে
সংবাদ সম্মেলনে সানির ভাবি ইশরাত জাহান বলেন, সানিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক রেখে পুলিশ নির্যাতন চালায়। আমরা সানিকে আনতে গেলে তারা তালবাহানা শুরু করে। এক পর্যায় পুলিশ জানায়, সানিকে আদালতে চালান করা হয়েছে।
সানির দুলাভাই মহসিন কাজী বলেন, সানিকে তিনদিন আটকে রেখে নির্যাতনের পর বয়স ১৯ বছর দেখিয়ে আদালতে পাঠায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিমেল রানাসহ ডিবির অন্য সদস্যরা। আমরা পুলিশকে সানির বিষয়ে সব জানিয়েছি। সানি এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। এসএসসির রেজিস্ট্রেশনে তার বয়স পহেলা জুলাই ২০০৬ সাল দেয়া আছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল
জন্মনিবন্ধনেও তাই দেওয়া। তবুও পুলিশ এসব বাদ দিয়ে সানির বয়স ৩ বছর বাড়িয়ে আদালতে পাঠিয়েছে। বয়স না বাড়ালে সানিকে কিশোর সংশোধানাগারে রাখা যেত। অথচ কিশোর হওয়ার পরেও সানিকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে। পুলিশের এমন কাণ্ড দেখে আমরা হতবাক। আমরা ডিবি পুলিশের বিচার চাই ও সানির মুক্তি চাই।
মাদারীপুর আদালতের আইজীবী অ্যাডভোকেট জামিনুর হোসেন মিঠু বলেন, গ্রেফতারের পর আসামিকে ২৪ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখার কোন সুযোগ নেই। আটকে রেখে নির্যাতন করা বেআইনি। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার বিচার হওয়ার বিধান রয়েছে কিশোর আদালতে।
আরও পড়ুন: টাইগারদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী
জানতে চাইলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক হিমেল রানা বলেন, মানিক সরদার হত্যা মামলায় সানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। পরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার কোর্টে চালান করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) আল-মামুন বলেন, হত্যা মামলার সঙ্গে সানি জড়িত। তাই তার পরিবার নিজেদের দায় এড়াতে অনেক কথাই বলতে পারে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই আসামি বলেছে, তার বয়স ১৯ থেকে ২০ বছর।
সান নিউজ/এমকেএইচ