আমিরুল হক, নীলফামারী: মাছ কাঁটার পর যে আঁশ ফেলে দেওয়া হয় ডাস্টবিনে, তার থেকেই তৈরি হচ্ছে অপরূপ সব হস্তশিল্প। বানানো হচ্ছে গয়না, মনীষী এবং দেবদেবীর মূর্তি।
আরও পড়ুন: আমি আদালতের কাছে কৃতজ্ঞ
এই সব শৌখিন কাজ স্থান পাচ্ছে মানুষের সাজে পোশাকে, ড্রয়িং রুমেও। তাই দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এসব পণ্য। ফলে মাছের ফেলে দেয়া আঁশে জীবনের আশা খুঁজে পেয়েছেন নীলফামারী সৈয়দপুরের কামারপুকুর ইউনিয়নের নিজপাড়ার কয়েকটি জেলে পরিবার।
অমল চন্দ্র দাস, উষা রানী ও নমিতা রানী জানান, প্রায় ১০ বছর আগে ঢাকার আশঁ ব্যবসায়ী বিধান চন্দ্র রায়ের সাথে পরিচয় হয়। তার পরামর্শে মাছের আশঁগুলো ফেলে না দিয়ে রোদে শুকিয়ে জমা করা শুরু করি। প্রথম প্রথম এ কাজে খুবই বিরক্ত হতাম।
দুই মন জমানোর পর তাঁকে ফোন করি আঁশগুলো নেওয়ার জন্য। ৩ হাজার ৬০০ টাকা দরে ৭ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করি। ফেলনা জিনিস দিয়ে এত টাকা হাতে পেয়ে আমারসহ আশা-পাশের পরিবারের আগ্রহ বাড়ে। এখন গ্রামের প্রায় ১২টি পরিবারের এ কাজ করেন। মহামারি করোনার সময়ও আমাদের এ ব্যবসা ভালো ছিল।
মাসে দুই একবার ঢাকা থেকে মহাজন এসে সব আঁশ নিয়ে যায়। এতে বাড়তি উপার্জনের সুন্দর একটা সুযোগ তৈরী হয়েছে। এই আয় দিয়ে সংসারের প্রয়োজন মিটিয়েও সঞ্চয় করা সম্ভব হচ্ছে। আগের অভাব অনটন কাটিয়ে সুখের মুখ দেখতে পাচ্ছি।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদণ্ড
সবুজ চন্দ্র দাস নামে আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, প্রথমে এলাকার মানুষ আমাকে অন্য চোখে দেখত। ঘৃণা করত। বলত যেই মাছের আঁশ আমরা ডাস্টবিনে ফেলে দেই সেগুলো সে বাড়ি এনে শুকায়। এখন স্বল্প পুঁজিতে ব্যবসা বেশি তাই এখন অনেকেই এই পেশায় আগ্রহী হতে শুরু করেছে। তাই আমরা আশা করছি পাড়ার অন্যদেরও এই কাজে নিয়জিত করে সৈয়দপুরের বাইরের অন্য উপজেলার হাট বাজার থেকেও মাছের আঁশ সংগ্রহ করবো।
এ প্রসঙ্গে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, মাছের আঁশ সংগ্রহ করে শুকিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ব্যবসাটি আরো লাভজনক হলে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব।
সান নিউজ/এমকেএইচ