সান নিউজ ডেস্ক: নাটোরের লালপুরে সৎ মায়ের সাথে জুয়েল আলী (৩০) নামে এক যুবকের পরকীয়ার জেরে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে সৎ ছেলে ও অপর প্রেমিক লিটন। এ ঘটনায় প্রেমিকাসহ অভিযুক্ত তিনজনকেই আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: খাদ্যঝুঁকিতে গোটা বিশ্ব!
শুক্রবার (১১ মার্চ) দুপুরে নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা। নিহত জুয়েল লালপুর উপজেলার দিলালপুর গ্রামের সাকেম প্রামাণিকের ছেলে। আটক সেলিনা, মেহেদী হাসান লিটন ও সৎ ছেলে মেহেদী হাসান একই এলাকার বাসিন্দা।
লিটন কুমার সাহা জানান, লালপুর উপজেলার দিলালপুর গ্রামের সেলিনা বেগমের সাথে একই গ্রামের লিটন ও জুয়েল নামে দুই যুবকের ত্রিভুজ পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। পরে প্রেমের বিষয়টি সেলিনার সৎ ছেলে মেহেদী হাসান জানার পর জুয়েলকে তাদের বাড়িতে আসতে নিষেধ করেন। কিন্তু জুয়েল তার কথা না শুনে তাদের বাড়িতে আসতেন। এ নিয়ে সেলিনা ও মেহেদীর সঙ্গে জুয়েলের বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এক পর্যায়ে সেলিনা তার সৎ ছেলে মেহেদী হাসান ও অপর প্রেমিক লিটন মিলে জুয়েলকে পরিকল্পনা করে হত্যা করেন। পরে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) দিনগত রাত ১০টা পর্যন্ত জুয়েল দিলালপুর বাজারে ক্যারাম বোর্ড খেলা শেষে চা খেয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
আরও পড়ুন: ফের ইউক্রেনের পরমাণু কেন্দ্রে হামলা
পথে প্রেমিকার ফোন পেয়ে দেখা করতে গিয়েছিলেন জুয়েল। সেখানে কৌশলে বেশ কয়েকটি ঘুমের ঔষধ খাওয়ায়ে বাড়ির পাশের মাঠে নিয়ে যায়। পরে সেখানে মেহেদী ও লিটন একত্রিত হয়ে জুয়েলের হাত পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়।
পরে শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা জুয়েলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে লালপুর উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সাকেম প্রামাণিক বাদী হয়ে লালপুর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারে মাঠে নামেন।
আরও পড়ুন: সব টিভিতে দেখাবে ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’
পুলিশ সুপার বলেন, জুয়েলের মরদেহ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি মোবাইল ফোন আলামত হিসেবে পাওয়া যায়। ওই মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে ঘটনার সপ্তাহ খানেক পর বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বিকেলে নিহত জুয়েলের প্রেমিকা সেলিনা বেগমকে লালপুর এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।
পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাতে অভিযান চালিয়ে মেহেদী হাসান লিটন ও মেহেদী হাসান নামে আরও দুইজনকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়। শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
সান নিউজ/এমকেএইচ