নিজস্ব প্রতিনিধি,ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ায় ৬ ইউনিয়নের নতুন কমিটি গঠন ও পদত্যাগের চাপ প্রয়োগকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে রুহিয়া চৌরাস্তায় লাঠি সোটা ও পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারী রুহিয়া থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আরিফ হোসেন,যুগ্ম আহবায়ক সবুজ মাহমুদ ও যুগ্ম আহবায়ক হেলাল হোসেন রুহিয়া থানার ১নং রুহিয়া ইউনিয়ন,২ নং আখানগর ইউনিয়ন,১৪ নং রাজাগাঁও ইউনিয়ন ,২০ নং রুহিয়া পশ্চিম ,২১ নং ঢোলারহাট ও ২২ নং সেনুয়া ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষনা করে ছয়টি ইউনিয়নে ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেয়।এতে পদবন্চিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়।এ নিয়ে গত ২ দিন থেকে অসন্তোষ বাড়তে থাকে ।
শনিবার দুপুরের পর থেকে পদ বন্চিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহরের চৌরাস্তায় মানববন্ধন করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। কিন্তু সেখানে ছাত্রলীগের পদধারী নেতারা আগেই অবস্থান নেওয়ায় তাদের সে চেষ্টা বিফলে যায়।
আরও পড়ুন: ফের ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে খারকিভ
এদিকে শনিবার রাত ১২ টার দিকে চৌরাস্তায় পদবন্চিত ছাত্রনেতাদের একটি গ্রুপ থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক সবুজ মাহমুদকে ধাওয়া করে চৌরাস্তার দখল নেয়।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সবুজ মাহমুদ সমর্থিত ছাত্রলীগের কর্মীরা চৌরাস্তার দখল নিতে রেলগেট হতে পাথর নিক্ষেপ করতে করতে এগিয়ে আসে।এ সময় উভয়পক্ষ দোকানের খড়ি ও বাঁশের লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে পদধারী হযরত আলী, পদবঞ্চিত মানিক ইসলাম, রবিউল ইসলাম , মিঠুন ও সবুজ মাহমুদের চাচা আব্দুস সাত্তার সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।গুতাদের মধ্যে মানিক ইসলাম(২২),হযরত আলী(২০) ও মিঠুন (১৯)কে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রুহিয়া থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক হেলাল হোসেন বলেন,রুহিয়া থানার ৬ ইউনিয়নে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অবস্থা জোরদার করতে জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশক্রমে আংশিক কমিটি ঘোষনা করা হয়। এতে একটি চক্রের গাত্রদাহন শুরু হলে তারা অনুমোদিত কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য আহবায়ক কমিটির ৩ নেতাকে বিভিন্নভাবে চাপ দেয়।কিন্তু তাতে তাদের সার্থ হাসিল না হলে কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের কমিটি হতে পদত্যাগ করতে অব্যাহত চাপ দিতে থাকে।সে কারণে পদবন্চিত ছাত্রলীগ কর্মীদের ইন্ধন জোগায়।আর উপরের ইন্ধন পেয়ে তারা থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক সবুজ মাহমুদকে ধাওয়া করে।নিজেদের মাঝে এরুপ ঘটনা শৃংখলা ভঙ্গের শামিল।
আরও পড়ুন: পুতিনকে জুডো ফেডারেশন থেকে বরখাস্ত
১নং রুহিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনিরুল হক বাবু বলেন,ঘটনার খবর পেয়ে আমি ও সাধারণ সম্পাদক দুলাল রব্বানী চৌরাস্তায় যাই এবং সংঘর্ষ ঠেকানোর চেষ্টা করি।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিমুন সরকার বলেন, রুহিয়া থানায় যে ৬টি কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাতে আমাদের লিখিত অনুমতি নেই। তবে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির মৌখিক সম্মতি রয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা চার মাস আগে লিখিতভাবে জানিয়েছি, জেলা ছাত্রলীগের অনুমতি ছাড়া যেন কমিটি ঘোষণা করা না হয়। আমরা লিখিত কাগজে বিশ্বাসী। কমিটি গঠনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘সুইফট’ থেকে বাদ রাশিয়া
রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা ওসি (তদন্ত) শহিদুর রহমান বলেন, শনিবার রাতে শহরের চৌরাস্তায় ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষের বিষয়ে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য,গত ২০ অক্টোবর ২০২১ তারিখে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজহারুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক হিমুন সরকার যৌথ সাক্ষরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষনা দেয় যে,বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঠাকুরগাঁও জেলার অন্তর্গত বিভিন্নউপজেলা,থানা,পৌরসভা,কলেজ,ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কোন কমিটি স্থগিত,বিলুপ্ত বা অনুমোদনের ক্ষেত্রে জেলা ছাত্রলীগের লিখিত অনুমতি ব্যতিত গঠন করা যাবে না।
সাননিউজ/এমআরএস