নিজস্ব প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী আছালং ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি ছেলে ও নাতনির সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে আলিম পাশ করেছেন। লেখাপড়ার যে কোনো বয়স নেই ৫০ বছর বয়সে তা প্রমাণ করলেন সিরাজুল ইসলাম।
মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তাইন্দং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি। তিনি সব ধরনের ভয়, সংকোচকে পেছনে ফেলে খাগড়াছড়ি ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-২.১৪ পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন।
শুধু তিনিই নন, চলতি বছরে তার বড় মেয়ের ঘরের বড় নাতি মো. নাজমুল হাসান জিপিএ ৪-৬৭ এবং ছোট মেয়ে মাহমুদা সিরাজ জিপিএ ৪-১৭ পেয়ে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে। একমাত্র ছেলে হাফেজ নেছারুদ্দীন আহমদ জিপিএ ৪-০০ পেয়ে চট্টগ্রাম বায়তুশশরফ কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করেছে।
আরও পড়ুন: জাপানি মায়ের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
এছাড়াও বড় মেয়ের ঘরের নাতনি তবলছড়ি ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে জিপিএ-৩.৭৬ পেয়ে দাখিল পাশ করেছে।
পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর বাবা-ছেলে-মেয়ের পাশের খবরে আনন্দের বন্যা বইছে সীমান্ত ঘেঁষা আছালং ইসলামপুর এলাকার মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়িতে। এ সময় প্রতিবেশী ও স্বজনরা অভিনন্দন জানাতে ছুটে আসেন তাদের বাড়িতে। স্বজনদের কেউ কেউ নিয়ে আসেন ফুল ও মিষ্টি। তার বাড়িতে ভিড় করছেন প্রতিবেশীরা। তাদের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা।
খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করা ছোট মেয়ে মাহমুদা সিরাজ বাবার এ সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, ইচ্ছাশক্তি আর অধ্যবসায় যে সাফল্য এনে দিতে পারে তার অনন্য দৃষ্টান্ত আমার বাবা। আমাদের ভাই-বোনের ফলাফলের চেয়ে বাবার ফলাফলে আমরা গর্বিত।
দীর্ঘ বিরতির পর লেখাপড়ার তাগিদ অনুভব করলেন কেন- জানতে চাইলে মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার কোনো বয়স নেই। ফলাফল ঘোষণার পর ছেলে-মেয়ে আর নাতির সঙ্গে নিজের কৃতিত্বের খবর পাওয়ার সময়টা আমার জীবনের সবচেয়ে সুখকর মুহূর্ত, এটা কখনো ভুলে যাবার মতো নয়। ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের সবাই চাইছে আমি লেখাপড়া অব্যাহত রাখি।
সান নিউজ/এনকে