নিজস্ব প্রতিনিধি:
খুলনায় ডা. আব্দুর রকিব খান নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় দেওয়া অভিযোগ নথিভুক্ত করতে বিলম্ব করায় সদর থানার ওসি আসলাম বাহার বুলবুলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে রিজার্ভ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) জানিয়েছে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে হরিণটানা থানার ওসি আশরাফ হোসেনকে সদর থানার ওসি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। ওসি বুলবুলকে প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) দেওয়া ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটামের পর এ সিদ্ধান্ত জানালো কেএমপি।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, আনীত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সদর থানার ওসি আসলাম বাহার বুলবুলকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে রিজার্ভ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে হরিণটানা থানার ওসি আশরাফ হোসেনকে সদর থানার ওসি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে রকিব খান হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ২য় আসামি আব্দুল কুদ্দুসকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শনিবার (২০ জুন) রূপসা উপজেলার পালেরহাট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে ডা. রাকিব হত্যা মামলায় পুলিশ ৬ জনকে গ্রেফতার করলো।
এর আগে ১৭ জুন রাতে অভিযান চালিয়ে এ মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি জমির, আবুল আলী, গোলাম মোস্তফা ও খাদিজাকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া ১৬ জুন রাতে রকিবের মৃত্যুর পরই অভিযান চালিয়ে আব্দুর রহিমকে গ্রেফতার করা হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রূপসা উপজেলার পালেরহাট থেকে আব্দুল কুদ্দুসকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য, খুলনা মহানগরীর মোহাম্মদ নগরের পল্লবী সড়কের বাসিন্দা আবুল আলীর স্ত্রী শিউলী বেগমের মৃত্যুর জেরে ১৫ জুন রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিউলীর স্বজনরা অপারেশনকারী ডা. রকিবকে মারধর করেন। এতে রকিব মারাত্মক জখম হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত রকিবের ছোট ভাই খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম গত ১৭ জুন ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ অবস্থায় ১৭ জুন বিএমএর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় রকিব হত্যার অভিযোগ ও মামলা গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করার অভিযোগ এনে বিএমএ নেতৃবৃন্দ খুলনা সদর থানার ওসির প্রত্যাহার দাবি করেন। ১৭ জুন রাতে আসামি গ্রেফতারের পর ১৮ জুন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন। একই সাথে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে জানান, মামলার সকল আসামি গ্রেফতার ও ওসি প্রত্যাহার না হলে ফের আন্দোলন শুরু করা হবে।