নিজস্ব প্রতিনিধি, গুরুদাসপুর (নাটোর): মামলা ও তালাকের কাগজে স্বাক্ষর না দেয়ায় দুই বোন সুখী ও সুমিকে মারধর এবং পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের দুজনের স্বামী আলমগীর হোসেন ও সবুজ আলীর বিরুদ্ধে।
গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) নাটোরের গুরুদাসপুরে চাঁচকৈড় পুরানপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার দুই বোন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, সুখীর ছোট বোন সুমির বিয়ে হয় চাঁচকৈড় পুড়ানপাড়া মহল্লার শহিদ আমিনের ছেলে সবুজ আলীর সাথে। একযুগ আগে সুখিরও বিয়ে হয়েছিলো একই এলাকার বাটুল মন্ডলের ছেলে আলমগীর হোসেনের সাথে।
নয় বছর ঘর সংসার করার পর আলমগীর দ্বিতীয় বিয়ে করে। রোজিনাকে দ্বিতীয় বিয়ে করায় সুখীর সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। এরই এক পর্যায়ে গত তিন বছর আগে সুখীর স্বামী আলমগীর তালাক দেয় সুখীকে।
এদিকে নির্যাতন সইতে না পেরে সুখী আদালতে মামলা করে। ওই মামলা তুলে নিতে আলমগীর বিভিন্ন সময়ে সুখীকে নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে সুখী বাবার বাড়ি চলে আসে। সেই সাথে আস্থা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন। এদিকে পারিবারিক কলহে সুমির স্বামী সবুজ আলীও নাটোর কোর্টে গিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি তার স্ত্রী সুমিকে তালাক দেয়।
নির্যাতিত জানান, পারিবারিক বিরোধের কারণে তারা স্বামীদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আসছিলেন। কিন্তু একপর্যায়ে তারা বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এরই মধ্যে সম্প্রতি তারা স্বামীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা করেন। এরপর স্বামীরা তাদের দুজনকেই তালাক দেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করানোর জন্য শুক্রবার দুজনের স্বামী একত্রে তাদের বাড়িতে গিয়ে মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করেন এবং কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেন তারা।
আরও পড়ুন: পদ হারালেন জায়েদ, সম্পাদক নিপুণ
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সুজন মুঠোফোনে বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। সুমি আমার অবাধ্য, তাই তাকে তালাক দিয়েছি। তবে আলমগীর নামের অভিযুক্ত ব্যক্তি মুঠোফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার আব্দুস সালাম বলেন, সুখী ও সুমির শরীরে বিভিন্ন অংশ জখমের চিহ্ন রয়েছে। সুখীর ডান হাত ও মাথার চুল কিছুটা পুড়ে গেছে।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মতিন বলেন, এ ব্যাপারে মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
সান নিউজ/এমকেএইচ