কক্সবাজার প্রতিনিধি: সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার আদালত চত্বরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় সোমবার (৩১ জানুয়ারি) আদালত চত্বরের বাইরে সাধারণ জনগণের ব্যানারে ওসি প্রদীপের ফাঁসি চেয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি করেন।
তাদের দাবি, ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পিতভাবেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। ওসি প্রদীপ পুলিশ হয়েও একজন সন্ত্রাসী। আমরা আদালতে সব আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছি। এমন নিষ্ঠুর ঘটনা যেন আর না ঘটে। যেন আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা থাকে।
এদিকে পুরো আদালত চত্বর জুড়ে অবস্থান নিয়েছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। রায়কে ঘিরে সেখানে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ইতিহাসে এ প্রথম এত দ্রুত কোনো হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে। ২৯ কর্ম দিবসে আদালত বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করে এই মামলার রায় প্রদান করছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি ও রামু থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদি হয়ে ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি টেকনাফ থানায় নথিভূক্ত করার পর আদালত তদন্তভার দেয় র্যাবকে।
আরও পড়ুন: মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায় আজ
একই সঙ্গে পুলিশের দায়ের করা মামলা তিনটিও র্যাবকে তদন্ত করতে আদেশ দেন আদালত। ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর র্যাব-১৩ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে ১৪ জন কারাগারে থাকলেও টেকনাফ থানার কনস্টেবল সাগর দেব পলাতক ছিল। অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয়েছে ৮৩ জনকে। একই দিন পুলিশের দায়ের করা মামলা ৩টির চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি কনস্টেবল সাগর দেবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই সঙ্গে পুলিশের দায়ের ৩টি মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলা থেকে সাইদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
সাননিউজ/এমএসএ