আমিরুল হক, নীলফামারী: নীলফামারীতে ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের ঠান্ডা বাতাসে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। বেড়েছে জ্বর, সর্দি ও কাশির প্রকোপ। ঘন কুয়াশায় দূরপাল্লার বাসসহ অন্যান্য যান দিনেও লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।
নীলফামারীর জলঢাকার মীরগঞ্জ মাঠে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি জমিতে সেচ দিয়ে রেখেছেন কৃষকেরা, কিন্তু তীব্র শীতের কারণে ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। ওই এলাকার কৃষক বিমল চন্দ্র রায় বলেন, যে ঠান্ডা, এমনি থাকা যায় না, জমিত নামি কেমন করি? রোয়া গাড়া জরুরি হওছে। দিনোত যেমন ঠান্ডা, তেমন বাতাস। ঘরের বাহিরে বেরা যাচ্ছে না বাহে।
আরও পড়ুন: নাটোরে গভীর রাতে আ’লীগ নেতার বাড়িতে হামলা
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে সৈয়দপুর ওয়াপদা মোড় এলাকায় কথা হয় ভ্যানযাত্রী বোতলাগাড়ী পাঠানপাড়া গ্রামের ফিরোজা বেগমের সঙ্গে। তিনি উত্তরা ইপিজেডের কর্মী। তিনি বলেন, জার (শীত) খুব বেশি হইছে। আস্তা দেখা যায় না। জান হাতোত নিয়া চাকুরিত যাওছি। দিন দিন কুশায়ার আর জার বাড়তে আছে।
ভ্যনচালক ইরশাদ হোসেন জানান, গত কয়কদিন থেকে ঘন কুয়াশার কারণে সকাল ১০টা পর্যন্ত ভ্যানের লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছেন। বিকেল ৪টার পর কুয়াশা নামা শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬টা বাজলে লাইট জ্বালিয়েও কিছু দেখা যায় না।
কথা হয় স্টেশনে থাকা ভিক্ষুক পাপিয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাইতোত কঠিন শীত পড়ে। দিনোত ঠান্ডার জন্যে কোনোটে বেরার পাও না। শীতের কাপড় নাই।
রাইতোত খুবই কষ্ট হয়। কয়দিন থাকি শীতের জন্যে বাইরোতও যাবার পাও না। শীত আসলে মোর খুব কষ্ট হয়।
আরও পড়ুন: দেশে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা শাখার সভাপতি ডা. শেখ নজরুল ইসলাম জানান, কয়েক দিন ধরে সর্দি-জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত রোগী
চিকিৎসা নিতে বেশি আসছেন। প্রতিবছরই আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় সর্দি-জ্বর ও কাশি হয়। এবারও তা-ই হচ্ছে। এতে ভয়ের কিছু নেই। তবে সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক ইয়াসির আরেফীন বলেন, প্রতি শীতে জেলার অনেক মানুষ কষ্টে থাকে। সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করি শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর। সরকারি সহায়তা ছাড়াও সবার উচিত আশপাশের শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
সান নিউজ/এমকেএইচ