আল আমিন, শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রোববার (২৩ জানুয়ারি) সকালে ঘোড়া মার্কা ও টেলিফোন মার্কার ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ঘোড়া মার্কার নির্বাচনী অফিস ও বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ১০জন আহত হয়েছেন। আহতদেরকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষে মামলার প্রস্তুতি চলছে। উভয় গ্রুপের সমর্থকরা অপর গ্রুপের লোকজনদের দায়ী করছে। পুলিশ বলছে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নাওডোবা কলম ঢালি কান্দি এলাকার সেলিম ঢালি ও রোকন ঢালি জানান, গত শনিবার দুপুরে নাওডোবা ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মাস্টার আঃ কাদির হাওলাদার (আনারস মার্কা) আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ঘোড়া মার্কার প্রার্থী আলমগীর হোসেন ঢালিকে সমর্থন দেওয়ায় অপর প্রার্থী নাসির জমাদার (টেলিফোন মার্কা) এর সমর্থকরা ঈষান্বিত হয়ে রোববার সকালে জাজিরার নাওডোবা গোল চক্কর এলাকায় ঘোড়া মার্কার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে।
আরও পড়ুন: আইন হলে বিএনপি চুরি করতে পারবে না
এ সময় ঘোড়া মার্কার সমর্থক মোতাহার হোসেন ঢালি বাধা দিলে তার উপর টেলিফোন মার্কার সমর্থকরা হামলা করে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ঘোড়া মার্কার সমর্থকরা গোল চক্কর এলাকায় যায়। এ সময় প্রতিপক্ষ টেলিফোন সমর্থক ৫০/৬০ জন লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোড়া মার্কার সমর্থকদের ধাওয়া করে।
এতে ঘোড়া মার্কার সমর্থক রেজাউল ঢালি, বকুল শেখ, শাহিন শেখ, বিপ্লব ঢালি আহত হয়। আর টেলিফোন মার্কার সমর্থক জাহিদ ঢালি, আনিছ ঢালি ও রনি আহত হয়। এরপর হামলাকারীরা কলম ঢালি কান্দি গ্রামের মানিক ঢালি ও মোতাহার ঢালির বাড়ি-ঘরে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর করে ঘরের মালামাল তছনছ করে ও লুটপাট করে।
এছাড়া তাহছিনা বেগম, সিলভিয়া ও ছোট শিশু ছোয়াদ খানকে মারপিট করে আহত করে। এক পর্যায়ে এলাকার লোকজন তাদের ঘিরে ফেললে হামলাকারীরা একটি মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদেরকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন: বেড়েছে শনাক্ত, কমেছে মৃত্যু
এ ব্যাপারে ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমগীর হোসেন ঢালি বলেন, ঘটনার সময় আমি শরীয়তপুর শহরে ছিলাম। টেলিফোনের মাধ্যমে আমি বিষয়টি অবহিত হয়েছি। গত শনিবার চেয়ারম্যান প্রার্থী মাস্টার আঃ কাদির হাওলাদার আমাকে সমর্থন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী নাসির জমাদার ও তার সমর্থকরা আমাদের সমর্থকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। তারই বহিঃপ্রকাশ করতে গিয়ে রোববার সকালে গোল চক্কর গিয়ে আমার অফিস ভাংচুর করে। বাধা দেয়ায় আমার কর্মীদেরকে মারপিট করে। এরপর আমাদের বাড়ি বাড়িতে ঢুকে মহিলা, শিশু ও লোকজনদের মারপিট করে। ঘর দরজা ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ ঘটনায় আমার সমর্থক কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছে। আমি এঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই ও প্রশাসনের নিকট সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে টেলিফোন মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসির জমাদার বলেন, আমার সমর্থক আনিছ ঢালি গোল চক্কর এলাকায় চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিল। এ সময় ওই তিনি দোকানে থাকা ভোটার সাথে টেলিফোন মার্কার জন্য ভোট চায়। এ সময় ঘোড়া মার্কার সমর্থক মোতাহার ঢালি, শাহিন শেখ, রেজাউল, বকুল শেখসহ ২৫/৩০ জন সেখানে গিয়ে হামলা করে আনিছ ঢালিকে মাথা ফাটিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: রাজধানীর নতুনবাজারে ফার্নিচারের শো রুমে আগুন
এ ঘটনার পর উত্তেজিত লোকজন ঘোড়ার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে। ঘোড়ার সমর্থকরা আমার কর্মী জাহিদ ও রনিকে মারপিট করে আহত করেছে। তারা হাসপাতালে ভর্তি আছে। এ ঘটনায় হিরন ঢালি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে জাজিরা থানার ওসি মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘটনার পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
সান নিউজ/এমকেএইচ