মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জে টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় ফানুসের আগুনে পুড়ে গেছে খামারির ৫ গরু। পরে খামারি পোড়া গরুগুলোকে বাধ্য হয়ে নাম মাত্র মূল্যে কসাইয়ের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। উপজেলার আউটশাহী ইউনিয়নের চৈয়পাড়া গ্রামে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের সময় গত ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বইছে সমালোচনার ঝড়। এডভোকেট এইচ এম মাসুম নামের একজন তার ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে পোস্ট করেছেন। তিনি সাবেক অফিস সেক্রেটারি ঢাকা আইনজীবী সমিতি।
তিনি লেখেন, ‘ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন এর উম্মাদনা শহর থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকের উম্মাদনার কারণে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যাহা কোনো অবস্থায় কাম্য নয়। ফানুস নামের অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতিকর বস্তু নিয়ে আগুনের গোলা খোলা আকাশে পাঠিয়ে দিয়ে অনেকে আনন্দিত হয়ে মনের তৃপ্তির আনন্দের ঢেউ তুললেও অনেকে ভুলে যান তাহার এই আনন্দ অন্যের কান্নার কারণ হয়ে যেতে পারে।
এইচ এম মাসুম আরও লেখেন, আমি কৃষক জামাল খালাসীকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট দাবি জানাচ্ছি।
জানা গেছে, ওই গ্রামের গ্রামের ঋনগ্রস্থ প্রান্তিক কৃষক জামাল খালাসী তার নিজস্ব গোয়ালঘরে ঋণ নিয়ে ১২টি গাভী লালন পালন করে আসছিলেন। গাভীগুলোকে শীতের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য গোয়াল ঘরের চারদিকে পাটের তৈরি বস্তাদিয়ে বেঁড়া দিয়েছিলেন।কিন্তু ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাত বারোটার দিকে আকাশ থেকে উড়ে আসা ফানুসের আগুনে তার গোয়াল ঘরের বস্তা কাটার মধ্যে আগুন লেগে যায়।
এ সময় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়লে জামাল খালাসীসহ এলাকাবাসী সাতটি গরুকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পাঁচটি গরু অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে জামাল খালাসী চারটি গরুকে নামে মাত্র মূল্যে কসাইদের কাছে বিক্রি করে দেন। অপর অগ্নিদগ্ধ একটি গরু গুরুতর অবস্থায় এখনো জামাল খালাসী লালন-পালন করছেন। গরুটিও যে কোন সময় মৃত্যু হতে পারে।
এ ব্যাপারে জামাল খালাসির চাচা সাত্তার খালাসী বলেন, আমার ভাতিজা জামাল তার বাড়িতে গোয়ালঘর তুলে ১২টি গরু লালন পালন করে আসছিল। শীতের জন্য গোয়াল ঘরের চারপাশে পাটের তৈরি বস্তা দিয়ে বেড়া দিয়েছিলো। কিন্তু ৩১ ডিসেম্বর রাত বারোটার দিকে উড়ে-আসা ফানুস হতে হঠাৎ করেই আমার ভাতিজার গোয়াল ঘরে আগুন লেগে যায়।
এ বিষয়ে এডভোকেট এইচ এম মাসুম বলেন, ঘটনাটি আমার গ্রামের। আমার গ্রামের লোকজন আমাকে ছবি তুলে ও ভিডিও করে পাঠিয়েছে। আমার সাথে ক্ষতিগ্রস্ত জামাল খালাসীর একাধিকবার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে জানিয়েছেন বিভিন্ন সংস্থা হতে ঋণ নিয়ে তিনি এই গরুর খামারটি গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু মানুষের একটুখানি আনন্দের বলি হয়ে আজ সর্বস্বান্ত হতে হলো জামাল খালাসীকে।
সান নিউজ/এমকেএইচ