আমিরুল হক, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: রিকশা ও অটোরিকশার যানে যুক্ত হয়েছে ব্যাটারি। রাতদিন সব সময়ই ভাঙ্গারাস্তা ও অলিগলি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত বাহন। বিকল্প না থাকায় বেপরোয়া গতির এই বাহনে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন মানুষেরা। অনেকই সম্মুখীন হচ্ছেন দুর্ঘটনার। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ক্রমেই বাড়ছে ব্যাটারিচালিত যানের দৌরাত্ম।
সৈয়দপুর পৌরসভার লাইসেন্স শাখা জানিয়েছে, শহরে প্রায় ৩ হাজার বৈধ রিকশা রয়েছে। এর বাইরে আরও অন্তত ৫ থেকে ৭ হাজার অবৈধ রিকশা পাশের উপজেলা ও ইউনিয়নগুলো থেকে ঢুকে। এসব অবৈধ রিকশার মধ্যে অন্তত ২ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা রয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশার কোন অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবে তাদের কাছ থেকে পৌর এলাকায় পার্কিংয়ের জন্য বাৎসরিক চার্জ নেওয়া হয়।
এসব ব্যাটারিচালিত রিকশা উচ্চ আদালতের নির্দেশে নিষিদ্ধ রয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এসব রিকশা ঠিকই অবাধে চলাচল করছে। পৌর কর্তৃপক্ষ ও ট্রাফিক পুলিশ কোনো ভূমিকাই নিচ্ছে না। দ্রæতগতিসম্পন্ন হওয়ায় এসব যানের চালক সহজে ব্রেক কষতে পারেন না। এতে প্রায়ই সড়কে রিকশা উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা।
নিরাপদ না জেনেও কেন রাস্তায় এমন প্রশ্নের উত্তরে মজিদুল ইসলাম নামে এক চালক বলেন, ‘মুইতো রিস্কে আছোঁ। কিন্তু এই ইস্কাত কষ্ট কম। এ্যানা বেশি টাকা কামাই করমো দ্যাখি এই ইস্কাখ চালায়ছোঁ’।
শহরের নতুনবাবু পাড়া এলাকার শিক্ষিকা কোয়েলিয়া বিশ্বাস বলেন, স্কুলে যাতায়াতের জন্য ঠেকায় পড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশায় ওঠতে হয়। ওরা এত জোরে চালায় যে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। পারলে হাওয়ায় ভাসে। একজন আরেকজনের রিকশায় লাগিয়ে দিয়ে নিজেরা নিজেরা ঝগড়া করে। আমরা বসে বসে দেখি।
ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক কামাল উদ্দিন জানান, রিকশায় কারিগরিভাবে বাড়তি কোনো নিরাপত্তার সুযোগ-সুবিধা না থাকা এবং সাধারণ রিকশার মতো ব্রেক থাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। আর এতে যে পেডেল আছে তাতে এই রিকশা কিছুটা ভারী হওয়ায় পায়ে চেপে চালানোও সম্ভব হয় না।
একাধিক যাত্রীর অভিযোগ, ‘ম্যানেজ করে’ অনুমোদনহীন ব্যাটারিচালিত এসব রিকশা অবাধে চালিয়ে নিচ্ছে সুবিধাভোগী একটি বিশেষ মহল। বেপরোয়া গতির এই রিকশার ভাড়াও অস্বাভাবিক, যা প্যাডেলচালিত রিকশার কয়েক গুণ। স্থায়ী ভাবে এইসব অবৈধ এই যান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পৌরবাসী।
সান নিউজ/এমকেএইচ