আদিল হোসেন তপু, ভোলা: আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতারুল হাসান সপনের নেতৃত্বে নির্যাতন, অগ্নি সংযোগ, বোমা হামলা, নারীর সম্ভ্রমহানি ও লুটতরাজের ঘটনায় নিরাপত্তা ও বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নওশাদ হোসেন মুন।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভোলা পৌর শহরের গাজিপুর রোডস্থ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নওশাদের নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় নির্যাতিত নারী পুরুষসহ ভোলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নওশাদ হোসেন লিখিত বক্তব্য জানান, ছোট বেলা থেকেই জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু ও তার সু-যোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তিনি আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে ইউপি নির্বাচনে ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদীর ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী।
তিনি আরও জানান, নির্বাচন অফিস থেকে প্রতিক বরাদ্দর পর থেকেই তার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতারুল হাসান স্বপনের নেতৃত্বে তার ক্যাডার ও গুন্ডা বাহিনী পুরো ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতনের স্টিমমরোলার চালানো শুরু করেছে। তার উপস্থিতিতে ক্যাডাররা দক্ষিণ দিঘলদী'র বটতলা বাজারে তার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের দোকান-পাটে হামলা, লুটতরাজ ও ভাংচুর চালিয়ে সেগুলোতে তালাবদ্ধ করে রেখেছে।
এরপর থেকে সেখানে স্বপন বাহিনীর তান্ডবলীলা থেমে থাকেনি। এলাকায় আমার সমর্থক সহ একেরপর এক সাধারণ ভোটারদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন ও হামলা অব্যাহত রেখেছে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী স্বপনের বাহিনী। রাত-দিন বিরামহীনভাবে গ্রামের আনাচে-কানাচে এসব সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ ও বোমা ফাটিয়ে দক্ষিণ দিঘলদীর জনপদকে অশান্ত করে তুলেছে।
স্বপনের ক্যাডাররা শুক্রবার ভোররাতে তার গ্রামের বাড়ির বৈঠকখানাটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। আগামী ৫ জানুয়ারি তার কোন সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে গেলে তাদের হত্যা, গুম ও হামলা করে গুরুত্বর জখম করার হুমকি দিচ্ছে স্বপন ও তার সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
নওশাদ আরও বলেন, নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতারুল হাসান স্বপন তার নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মারতে হবে বলেও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ বিনষ্ট ও কেন্দ্রে দখলে নিতে স্বপন তার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে এলকায় নানা গুঞ্জন রটাচ্ছেন। ইতিমধ্যে ওই ইউনিয়নে ভোট ডাকাতি করতে তার নিকটাত্মীয় জেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ফিদা হাসানকে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
শুধু তা-ই নয়, স্বপন পরিবারের নিয়ন্ত্রিত তার চাচা সংসদ সদস্য আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদের মাতা মরহুমা ফাতেমা খানমের নামীয় বাংলাবাজারস্থ ‘ফাতেমা খানম’ কলেজের অধিকাংশ শিক্ষকগণকে দক্ষিণ দিঘলদীর ভোট কেন্দ্রেগুলোর প্রিসাইডিং ও পুলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। যাতে নিজেদের ইচ্ছেমত ভোট ডাকাতি করা যায়।
এসব নীল নকশা করে স্বপন বাহিনী এখন পুরো ইউনিয়নবাসীকে এক ভীতিকর অবস্থার মধ্যে জিম্মি করে রেখেছেন। গ্রামের মানুষের উপর ব্যাপকভাবে নির্যাতন চালাতে বিভিন্ন জেলা থেকে ইতিমধ্যেই ভাড়াটিয়া কয়েকশত সশস্ত্র ক্যাডারদেরকে দক্ষিণ দিঘলদীতে এনে রেখেছেন। এরাই এখন প্রকাশ্যে গ্রামে অস্ত্রের মহড়া চালাচ্ছেন।
এই পরিস্থিততে দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নে আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট প্রদান করতে পারবেন কি-না সে বিষয়ে তিনি এবং এলাকার জনগণ খুবই সংশয় আর দ্বিধার মধ্যে রয়েছেন। এ সময় তিনি পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনসহ নির্বাচন কমিশনের কাছে অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
সান নিউজ/এমকেএইচ