নিজস্ব প্রতিনিধি বাগমারা (রাজশাহী): বাঙলি জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের জান্নাতবাসী করার দোয়া করে পদ হারালেন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক। তিনি রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের কমিটিতে ধর্মবিষয়ক সম্পাদক পদে ছিলেন। বাগমারা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার মৃধা মনসুর এবং সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার মৃধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবদুর রাজ্জাক দোয়া পরিচালনা করার সময় অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য একটি বাক্য উচ্চারণ করেছেন। এ জন্য আওয়ামী লীগের কার্যকরী সভা ডেকে তাঁকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য উপজেলা কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর প্রথম প্রহরে তাহেরপুর পৌরসভার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌর আওয়ামী লীগসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনীতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর দোয়া শেষে মোনাজাত করা হয়।
ওই মোনাজাত পরিচালনার জন্য তাহেরপুর পৌরসভার আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাজ্জাককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর মোনাজাতসহ ওই রাতের শহীদ মিনারের কর্মসূচি ‘বাগমারা টাইমস’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওতে মোনাজাতে আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘মাবুদ জাতির জনক এবং তার পরিবারকে যারা হত্যা করেছেন, আল্লাহ তাদের সবাইকে জান্নাত দান করে দিও আল্লাহ।’ ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসার পর পৌর আওয়ামী লীগ জরুরি সভা ডেকে তাকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
মুখ ফসকে এমন বাক্য বের হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার জনক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যারা হত্যা করেছে, মানুষ নয় অমানুষ, মাবুদ। জাতির জনক ও তার পরিবারকে যারা হত্যা করেছে, তাদের সকলকে তুমি জান্নাত দান করে দিও আল্লাহ।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র আবুল কালাম আজাদ জানান, তারা বুঝতে পারেননি দোয়া পরিচালনার সময় এমন বাক্য উচ্চারণ করেছেন। এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এ জন্য সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সান নিউজ/এমকেএইচ