নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলার বর্ষা, এটি এমনই এক ঋতু, যে কাউকে উদাস করে ফেলে। মনের ভেতরে লুকানো নিগূঢ় কোনো দুঃখবোধকে এক নিমিষেই জাগিয়ে তুলতে পারে এ ঋতু।
সংশোধিত বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বাংলা বছরে ছয়টি ঋতু বিরাজমান। আজ বছরের প্রথম ঋতু গ্রীষ্মের শেষ দিন। অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠের শেষ দিন আজ।
রসালো শাঁসালো হরেকরকম ফলের ডালি নিয়ে হাজির হয়েছিল ‘মধুমাস’ জ্যৈষ্ঠ। টক-মিষ্টি আম, লাল লাল লিচু আর জাতীয় ফল কাঁঠালও পেকেছে এই মাসে। মধুময় ফলের ডালি যেন পূর্ণতা পায় এ সময়ে।
আবার তা ধুয়েমুছে সাফও করে দিতে পারে। কবির মনেও গভীর ছায়া ফেলে এ ঋতু। তাইতো বর্ষা উদাস করেছে কত খেয়ালী মানুষকে। আর তখন তাদের হাত ধরে শত-সহস্র কবিতা লেখা হয়েছে বাংলা সাহিত্যে।
কালই আষাঢ়ের প্রথম দিন। আর আষাঢ় মানেই তো বর্ষা কিংবা বাদলা দিন!
এদিকে দেশের আবহাওয়ায় বর্ষার আগমন ঘটেছে কিন্তু কয়েকদিন আগেই। বছরের প্রথমবারের মতো বর্ষার বৃষ্টি হয়েছে গত শুক্রবার।
গতকালও প্রায় সারাদেশেই বৃষ্টি হয়েছে। আগামী কয়েকদিন সারাদেশে এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দু’মাস বর্ষাকাল। যদিও আষাঢ় মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত আমাদের দেশে প্রচুর বৃষ্টি হয়। গ্রীষ্মে সূর্যের প্রচণ্ড তাপে যখন নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর শুকিয়ে যায়, মানুষজন, পশু-পাখি অস্থির হয়ে পড়ে। গাছপালা শুকিয়ে মরার মত হয়ে যায় তখন বর্ষা এসে সকলের মধ্যে নূতন প্রাণের জোয়ার এনে দেয়।
বর্ষাকাল আমাদের শহুরে ও গ্রামীণ জীবনে ভিন্ন। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, যথাযথ বৃষ্টিপাত বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় ফসল ফলাতে সহায়তা করে। অন্যদিকে অনাবৃষ্টি ও খরায় বাংলাদেশের কৃষি ভেঙে পড়ে। তাই বর্ষাকাল আমাদের জীবনে সামগ্রিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে বর্ষাকে সামনে রেখে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় আষাঢ় মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত নৌকা বিক্রির ধুম পড়ে। সদর উপজেলার কড়াপুর এবং নভগ্রাম রোড সড়কের পাশের বিভিন্ন খালে নৌকা বিক্রি হয়।
স্বরুপকাঠীর আটঘর, কুড়িয়ানা, ইন্দেরহাট ও মিয়ার হাটে নতুন তৈরি ছোট নৌকা বিক্রির হাট বসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন ধরনের নৌকা বেচাকেনা এরই মধ্যে জমজমাট হয়ে উঠে। সর্বত্রই নৌকার কদর বেড়ে যাওয়ায় নৌকা তৈরির কারিগরদের এখন ব্যস্ততার কোনো শেষ নেই।
বরিশালের খাল-বিল, নদী-নালা বেষ্টিত এলাকা উজিরপুর, বানারীপাড়া ও আগৈলঝাড়ারর সাতলার বিভিন্ন ইউপির চলাচল ও ব্যবসা বাণিজ্যের একমাত্র বাহক নৌকা।
কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করা সবজি, ধান কাটা, বাগান থেকে পেঁয়ারাসহ, বিভিন্ন জাতের ফসল সংগ্রহ এবং বাজারজাত করার কাজে এই বিল অঞ্চলে নৌকার বিকল্প নেই।
আর এ বাড়তি চাহিদার যোগান দিতে নৌকা তৈরির কারিগররা দিন রাত শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।
সান নিউজ /সালি