নিজস্ব প্রতিনিধি, বরিশাল: মেধাতালিকায় পঞ্চম স্থান অধিকার করেও ভূমিহীন হওয়ার কারণে চাকরি না হওয়া আসপিয়া ইসলাম কাজল অবশেষে জমি ও ঘর পাচ্ছেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা শুরু হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি আসপিয়াকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমিতে ঘর নির্মাণ ও চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়ার নির্দেশ দেন।
এ সংবাদ জানতে পেরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন আসপিয়া ও তার পরিবার। তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
পরে আসপিয়ার স্থায়ী ঠিকানা গড়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার।
মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে চলমান আশ্রয়ণ প্রকল্প ২-এর আওতায় আসপিয়ার পরিবারকে ঘর ও জমি দ্রুত সময়ের মধ্যে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
আসপিয়া ইসলাম কাজল পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে বরিশাল জেলায় শরীরিক, লিখিত ও মৌখিকসহ সাত ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
কিন্তু বরিশাল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়ায় চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নিয়োগ থেকে ছিটকে পড়েন তিনি।
হতাশায় বুধবার বরিশাল পুলিশ লাইন্সের গেটে দীর্ঘক্ষণ বসেছিলেন আসপিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় সেই ছবি।
তবে জমি ও ঘর পেলেও আসপিয়ার পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত রয়ে গেছে। কারণ, চাকরির আবেদনের সময় তার স্থায়ী ঠিকানা ছিলো কি না, বিধি অনুযায়ী সেটাই ধরা হবে।
এব্যাপারে বরিশালের পুলিশ সুপার মো. মারুফ হাসান শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে বলেন, ‘আমাদের নিয়োগপ্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি। আমরা আসপিয়াকে বাদ দিইনি। আবার অ্যাকসেপ্টও (গ্রহণও) করিনি।
জমি ও ঘর পাওয়ার পর আসপিয়াকে নিয়োগ দেয়ার সুযোগ আছে কি না-জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ প্রশাসন সব ব্যাপারে ইতিবাচক। তবে যদি কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তাহলে নিয়মের মধ্যে থেকে নিতে হবে।
বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম আক্তারুজ্জামান পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বলেন, জেলাভিত্তিকভাবে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ হয়। এ ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীকে অবশ্যই জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। কিন্তু আসপিয়ার জমি না থাকায় তার নিয়োগ আটকে আছে। যদি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আসপিয়াকে জমি ও বাড়ির বন্দোবস্ত দেয়, সে ক্ষেত্রেও সেটি আইনত কার্যকর হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ, আবেদনের সময় তার স্থায়ী ঠিকানা ছিলো কি না, বিধি অনুযায়ী সেটাই ধরা হবে। আবেদনের সময় তার কোনো স্থায়ী ঠিকানা ছিলো না।
এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো নির্দেশনা পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সুরাহার উদ্যোগ নিতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে আসপিয়ার পুলিশে চাকরি নিশ্চিত হয়েছে বলে ফেসবুকে কেউ কেউ পোস্ট দিচ্ছেন। তবে বিষয়টি গুজব বলেছেন আসপিয়া।
তিনি বলেন, পুলিশে নিয়োগের ব্যাপারটি নিশ্চিত হয়েছে এমন পোস্ট ফেসবুকে দেখেছি। তবে এখনও সে রকম কিছু হয়নি। চাকরিসংশ্লিষ্ট কোনো চিঠি বা খবর আমাকে পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।
সান নিউজ/এফএইচপি