নিজস্ব প্রতিনিধি, কুমিল্লা: কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহা হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর সংরাইশ গোমতী বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, মামলার ৩ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেন ও ৫ নম্বর আসামি মো. সাজেন। কাউন্সিলর সোহেলের বুকের বাম পাশে গুলি করেছিলেন সাজন। আর সোহেলকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করেছিলেন সাব্বির।
সাব্বির হোসেনের বাড়ি কুমিল্লা নগরের সুজানগর পানির ট্যাংক এলাকায়। তিনি ওই এলাকার রফিক মিয়ার ছেলে। সাজনের বাড়ি নগরের সংরাইশ রহিম ডাক্তারের গলির ভেতরে। তিনি ওই এলাকার কাকন মিয়া ওরফে চোরা কাকনের ছেলে।
এর আগে ২২ নভেম্বর বিকালে কুমিল্লা নগরের পাথুরিয়াপাড়া থ্রিস্টার এন্টারপ্রাইজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর সোহেলসহ গুলিবিদ্ধ হন অন্তত ছয়জন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহেল ও তার সঙ্গী হরিপদ সাহার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আলমকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে মামলা করা হয়। পরে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন, মো. মাসুম, মো. সুমন, আশিকুর রহমান রকি, আলম মিয়া ও জিসান মিয়া। এছাড়া এজাহারের বাইরের মোহাম্মদ রাব্বি ইসলাম অন্তু নামের একজনকেও গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাত সোয়া ১২টার দিকে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ হত্যা মামলার দুই আসামি সংরাইশ ও নবগ্রামে অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে কোতোয়ালি মডেল থানা ও ডিবি পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালায়।
ডিবি ও থানা পুলিশের দলটি বালুমহলের কাছে সংরাইশ গোমতী নদীর বেড়িবাঁধের কাছে পৌঁছালে আসামিরা এলোপাতাড়ি গুলি করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। পরিস্থিতি শান্ত হলে ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে, কুমিল্লা ডিবির এসআই পরিমল দাস জানান, সন্ত্রাসীদের গুলিতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গোলাগুলির সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোহান সরকার জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি পাইপ গান, পিস্তলের অব্যবহৃত গুলি, গুলির খোসা ও কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়। মৃত ব্যক্তিদেরকে কাউন্সিলর সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ হত্যার আসামি বলে শনাক্ত করেছেন স্থানীয়রা।
সান নিউজ/এমকেএইচ