মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি:
পদ্মা সেতুর ২৫ ও ২৬ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হলো ৩১ তম স্প্যান। এই স্প্যানটি বসানোর ফলে ৪.৬৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে সেতুটির। এ নিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে পাঁচটি স্প্যান বসিয়েছে দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা। ৩০ তম স্প্যান বসানোর ১১ দিনের মাথায় বসলো ৩১ তম স্প্যানটি। আর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে এখন আরো ১০টি স্প্যান বসানো বাকি রইলো।
বুধবার (১০ মে) পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের স্প্যান বসানোর তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বিকাল ৪:০২ মিনিটে ৩১তম স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়।
এদিকে, ৩১তম স্প্যান বসানোর মধ্যে দিয়ে জাজিরার অংশে আর কোন স্প্যান বসানো বাকি থাকবে না। মাওয়া অংশে স্প্যান বসানো বাকি থাকছে ১০টি। সেগুলো বসানো সম্পন্ন হলে সেতুর পূর্ণ অংশ ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান হবে।
এর আগে, সকাল ৯টায় ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের তিন হাজার ১৪০টন ওজনের স্প্যানটি মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ভাসমান ক্রেন বহন করে রওনা দেয়। নির্ধারিত পিলারের কাছে পৌঁছায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে।
প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, সেতুর ১৫ ও ১৬ নম্বর পিলারের কাছে স্প্যানবহনকারী ক্রেনটি ডুবচর ও তীব্র স্রোতের কারণে আটকা পড়ে গিয়েছিল। এজন্য বেশি সময় লেগেছে নির্ধারিত পিলারের কাছে এসে পৌঁছাতে। ভাসমান ক্রেনটি নোঙর করে পজিশনিং করে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে স্প্যানটিকে তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়। রাখা হয় দুই পিলারের বেয়ারিং এর ওপর। স্প্যান বসানোর জন্য উপযোগী সময় থাকায় এবং সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় প্রকৌশলীরা অল্প সময়ের মধ্যেই স্প্যান বসাতে সক্ষম হন।
খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আগে থেকেই বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর ফলে বর্ষা মৌসুমের আগেই জাজিরায় বাকি থাকা এই স্প্যানটি বসানোর কাজ সফলভাবেই সম্পন্ন করল প্রকৌশলীরা। মাওয়ায় এখন ১০টি স্প্যান বসানোর অপেক্ষা।
পুরো সেতুতে দুই হাজার ৯৫৯ টি রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে, এরমধ্যে বর্তমানে বসেছে ১ হাজার ১০৫টি। আর রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯১৭টি, এর মধ্যে বসেছে ৬৩০ টি। পদ্মা সেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছিল পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ। আগামী বছরে যা শেষ হতে পারে। তারপরেই পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল করবে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।