নিজস্ব প্রতিনিধি, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) তে জাতীয় জেল হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে নানা কর্মসূচি পালন করেছে।
বুধবার (৩ নভেম্বর) দিবসটি উপলক্ষে বেলা ১১টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খাইরুজ্জামান লিটন।
সভায় প্রধান আলোচক অধ্যাপক আবুল কাশেম বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাদের মনে সংশয় জন্মে যে এই চার নেতা যদি বেচে থাকলে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল হবে না। তাই তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাকের প্রত্যক্ষ মদদে ১৯৭৫ সালের আজকের এই দিনে জেলখানায় হত্যা করা হয়। জাতীয় এই চার নেতা ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। তারা চাইলেই দেশের প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতে পারতেন। কিন্তু তারা তা না করে দেশকে মুক্ত করারা শপথ নেন। তাদের ব্রত একটাই। রাজনীতির মাধ্যমে জনসেবা করা।
তিনি আরও বলেন, তারা চাইলেই ঢাকায় রাজনীতি করতে পারতেন। কিন্তু তারা তা না করে নিজ নিজ এলাকায় রাজনীতি করেছেন এবং ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের ভিতর এ মহান আদর্শবোধ লক্ষ করা যায়। তারা অর্থের লোভে রাজনীতি করেননি। তারা জনসেবার মাধ্যম হিসেবে রাজনীতিকে বেছে নিয়েছেন। আর এ কারণেই হয়তো তাদেরকে হত্যার পর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামাননের কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট মিলে মাত্র কয়েক হাজার টাকা পাওয়া যায়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এএইচএম খাইরুজ্জামান লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মাঠে-ময়দানে, গ্রাম-গ্রামান্তরে, ঘোড়ার গাড়িতে, ধুলি-ধুসরিত জিপে অথবা পায়ে হেটে অথবা নৌকায় দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ঘুরে জনমত তৈরি করে স্বাধীনতার পক্ষে নিয়ে গেলেন যারা, ঘাতকরা তাদেরকেই হত্যা করল। যে দেশে মানুষ দু-বেলা দু-মুঠো পেটপুরে খেতে পারত না, ঠিক মতো পড়তে পারত না এমন এক যুদ্ধ বিধ্যস্ত দেশকে পূণর্বাসন করা যদি অপরাধ হয় আর সেই অপরাধে যদি তাদেকে হত্যা করা হয় তাহলে সেই শোক সহ্য করা বড় কঠিন।
আলোচনা সভায় উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে ও রেজিস্ট্রার আবদুস সালামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপ উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া ও অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম। এসময় বিভিন্ন অনুষদের অধিকর্তাবৃন্দ, বিভাগের সভাপতি, হল প্রাধ্যক্ষ, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টরসহ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে কুরআনখানি ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয় ।
সাননিউজ/ জেআই