নিজস্ব প্রতিনিধি, বরিশাল: সন্তান প্রতিষ্ঠিত হলেও দেন না ভরণপোষণ। বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছেন বৃদ্ধা। সেই আবেদনকারী বৃদ্ধা আদালতে যেতে না পারায় তার বাড়িতেই গেলেন বিচারক। ঘটনাটি ঘটে বরিশালে। দুই সন্তান প্রতিষ্ঠিত হলেও ভরণপোষণ ও চিকিৎসার খরচ না দেয়ায় অভিযোগ দেন শয্যাশায়ী মা।
বাড়িতে গিয়ে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত দুই সন্তানের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বরিশাল নগরীর বৈদ্যপাতা এলাকার জাহানুর বেগমের বয়স ৭৫। নানা রোগে শয্যাশায়ী তিনি। স্বামীর মৃত্যুর পর বড় ছেলের কাছেই জোটে আশ্রয়। ভরণপোষণ, অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার ব্যয় মিলিয়ে কলেজ শিক্ষক ছেলে যা বেতন পান তাতে হিমশিম খেতে হয়।
প্রতিষ্ঠিত আরেক ছেলে ও মেয়ে তার খোঁজ নেন না, দেন না চিকিৎকার খরচ। বৃহস্পতিবার বাধ্য হয়েই বড় সন্তান আব্দুস সবুর হাওলাদারের মাধ্যমে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন জাহানূর বেগম।
ভুক্তভোগীর ছেলের বউ বলেন, আমি প্রাইভেট পড়াইতাম আম্মা পেছোনে সব খরচ করেছি। এখন সবসময় আম্মার সাথে থাকতে হয় আর পড়াতে পারি না। তাকে দেখতে-দেখতে আমিও অসুস্থ হয়ে পড়ছি।
ভুক্তভোগীর ছেলে বলেন, ভাইবোনদের বলেছিলাম তোরা টাকা দিবি না ঠিক আছে এসে দেখভাল কর। তাও করবে না। আমার কাছে থেকে টাকা ধার করেছে সেটাও দেয় না। তাহলে মায়ের একটু জমি আছে, সেটা যে বিক্রি করবো তাও দেবে না। উপায় না পেয়ে মা বাদী হয়ে মামলাটা করছে। এই মামলায় আমি একজন সাক্ষী।
বাদীর অনুপস্থিতিতে অভিযোগ গ্রহণ করেনি আদালত। কিন্তু পরে, ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ সমাজসেবা বিভাগের প্রবেশন কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে অসুস্থ জাহানুরের বাসায় গিয়ে তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, তিনি অসুস্থ থাকায় আমাদের বিজ্ঞ মহাদয় তার বাসায় গিয়ে জবানবন্দি গ্রহণ করেন। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত দুই সন্তানের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক বিশ্বাস বলেন, বাদীর এক ছেলে ও এক মেয়ে অভিযুক্ত। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত দুই সন্তানের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়। অভিযুক্তদের ১লা ডিসেম্বর সশরীরে আদালতে হাজির হতে বিলা হয়েছে।
সান নিউজ/এফএআর