নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্য নারীকে স্ত্রী সাজিয়ে স্ত্রীর এক কোটি ৭৬ লাখ টাকা মূল্যের জমি হাতিয়ে নিয়েছেন এক ব্যক্তি। এমন জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জ সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে।
জানা গেছে, মোছা. মার্জিয়া খানমকে তার স্বামী একেএম সেলিম ভূইয়া সদর উপজেলার মাইজখাপন মৌজায় ২০১৪ সালে হেবা ঘোষণার মাধ্যমে এক একর ৪৭ শতাংশ জমি দেন। চলতি বছর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সেলিম ভূইয়া এ বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি অন্য আরেকজন নারীকে স্ত্রী সাজিয়ে ওই জমি নিজ নামে রেজিস্ট্রি করে নেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভুয়া দাতা সাজিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করার সময় মার্জিয়ার জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি জালিয়াতি করা হয়। অভিযোগ রয়েছে দলিল লেখক ফারুক আহমেদ বাবু মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দলিলটি রেজিস্ট্রি করে দেন।
সেলিম ভূইয়ার সাজানো স্ত্রীর নাম নার্গিস আক্তার নদী। তিনি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে তার মায়ের সঙ্গে থাকেন। তিনি পেশায় হোমিও চিকিৎসক। এ বিষয়ে নার্গিস আক্তার নদী গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
জানা যায়, মার্জিয়া খানমের ছেলে জোবাইদুল ইসলাম আকিব ১৬ আগস্ট কিশোরগঞ্জ সদর সাবরেজিস্ট্রার বরাবর এ বিষয়ে অভিযোগপত্র দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে একেএম সেলিম ভূইয়া বলেন, এই দলিলটা অন্য একজন নারীকে স্ত্রী বানিয়ে আমি নিজের নামে রেজিস্ট্রি করেছি। এখন যেহেতু প্রকাশ হয়েছে, তাই মীমাংসা করে ফেলব।
দলিল লেখক ফারুক আহমেদ বাবু এ বিষয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফুরকান উদ্দিন খান মানিক বলেন, দলিলটির বিষয়ে ইতোমধ্যে সাবরেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি এর কপি পেয়েছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ওই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর সাবরেজিস্ট্রার মো. লুৎফর রহমান মোল্লা বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। বিষয়টি জেলা রেজিস্ট্রারকে জানানো হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে সব বলা যাবে।
জেলা রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ আবু তালেব বলেন, সাবরেজিস্ট্রারের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এখানে যদি কোনো সরকারি আইনের ব্যত্যয় ঘটে, তবে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
সান নিউজ/এনকে