নিজস্ব প্রতিনিধি, বরগুনা: বরগুনায় অপচিকিৎসার অভিযোগে আবারও গ্রেফতার হলেন বরগুনার সেই ভুয়া চিকিৎসক মাসুম বিল্লাহ। ভুল চিকিৎসার মাধ্যমে নয় মাসের এক শিশুর মৃত্যু হলে তার বাবা-মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
এর আগেও একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ভুয়া চিকিৎসক মাসুম বিল্লাহ। বারবার গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি তার কাছে যেন এখন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এবার কারাগারে নেয়ার সময় সাংবাদিকরা ছবি তুললে ব্যাঙ্গ করে হাসি দেন তিনি।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নাকের ডগায় শহরের ফার্মেসিপট্টি এলাকায় শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে অপচিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন মাসুম বিল্লাহ। বছর তিনেক আগে তিনি একজন শিশু বিশেষজ্ঞের ব্যক্তিগত চেম্বারের পিয়ন পদে চাকরি করতেন বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলার কেওরাবুনিয়া ইউনিয়নের চালিতাতলা গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর সাইদুল ইসলাম তার নয় মাস বয়সী শিশু ইয়ামিনকে জ্বর ও সর্দি-কাশির চিকিৎসার জন্য ভুয়া চিকিৎসক মাসুম বিল্লাহর কাছে নিয়ে আসেন। মাসুম বিল্লাহ শিশুটিকে দেখে জরুরী ভিত্তিতে বিভিন্ন মেডিকেল টেষ্ট করানোর জন্যে বলেন।
পরে সেসব মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট দেখে তিনি শিশু ইয়ামিনের হার্টে সমস্যা আছে বলে জানান এবং একদিন পর পর চেম্বারে এসে চারটি ইঞ্জেকশন নিতে হবে বলেও জানান তিনি।
এরই প্রেক্ষিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ইয়ামিনের শরীরে নিজ হাতে একটি ইঞ্জেকশন পুশ করেন মাসুম বিল্লাহ। ওই ইঞ্জেকশন পুশ করার পর থেকেই ইয়ামিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাসুম বিল্লাহর পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবনের পর পরই খিচুনি দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশু ইয়ামিন।
এ ঘটনায় ইয়ামিনের বাবা সাইদুল ইসলাম বরগুনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে বৃহস্পতিবার রাতে শহরের মাছ বাজার এলাকা থেকে মাসুম বিল্লাহকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, এর আগেও একাধিকবার তাকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। চিকিৎসক হিসেবে কোনো বৈধতাই তার নেই। বারবার জেল জরিমানার পরেও তিনি এসব করে যাচ্ছেন। বিষয়টি তিনি জেলা পুলিশকে অবহিত করেছেন বলে জানান।
সাননিউজ/ জেআই