নিজস্ব প্রতিনিধি, কলারোয়া (সাতক্ষীরা): সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চারজনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা অভিযোগে একমাত্র আসামি রায়হানুর রহমানের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা জেলা দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ মামলার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আসামি রায়হানুর সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার খলিষা গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিষা গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে শাহীনুর রহমান আট বিঘা জমিতে পাঙ্গাশ মাছ চাষ করতেন। মেঝ ছেলে আশরাফ আলী মালয়েশিয়ায় থাকতেন। আর ছোট ছেলে রায়হানুর রহমান বেকার। বেকারত্বের কারণে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে সে খাওয়া-দাওয়া করতেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোন কাজ না করায় স্ত্রীরায়হানুরকে তালাক দিয়ে চলে যায়।
সংসারে টাকা দিতে না পারায় শাহীনুরের স্ত্রী সাবিনা খাতুন তার দেবর রায়হানুরকে মাঝে মাঝে গালমন্দ করতেন। এর জের ধরে ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই মো. শাহীনুর রহমান (৪০) ভাবী সাবিনা খাতুন (৩০), তাদের ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী (১০) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানাকে (৮) কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায় রায়হানুর।
পরদিন ১৫ অক্টোবর ভোর চারটার দিকে হাত-পা বেঁধে তাদেরকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ সময় হত্যাকারী ওই পরিবারের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে না মেরে লাশের পাশে ফেলে রেখে যায়।
এ ঘটনায় নিহত শাহীনুর রহমানের শাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন বাদী হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে ১৫ অক্টোবর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাতেই মামলাটির তদন্তভার সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়।
মামলার তদন্তে নেমে সিআইডির সাতক্ষীরা অফিসের পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে শাহীনুরের ভাই রায়হানুরকে গ্রেফতার করেন। পরে রায়হানুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ২১ অক্টোবর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিলাস মণ্ডলের কাছে একাই হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
সান নিউজ/এমকেএইচ