নিজস্ব প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: আমতলী-পটুয়াখালী-কলাপাড়া মহাসড়ক দখল করে কৃষকরা ধান মাড়াই করার অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। ধান শুকানো ও খড় শুকানোর কারণে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলছে শত শত যানবাহন ও পথচারীরা। সড়ক দখল করে এভাবে কৃষি কাজ করায় বাড়ছে দুর্ঘটনা।
পটুয়াখালী-আমতলী-কলাপাড়া মহাসড়কের শাখারিয়া থেকে বান্দ্রা পর্যন্ত ৩৬ কিলোমিটার মহাসড়ক আমতলী উপজেলার মধ্যে। এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত বাস ট্রাক মাহেন্দ্র ট্রলি ব্যাটারি চালিত অটো টমটম মটর সাইকেল ও পোর্ট থেকে পণ্য পরিবহনকারী ভারী যানবাহন চলাচল করছে। বর্তমানে উপকূলীয় আমতলীতে চলছে আউশ ধান কাটার মৌসুম। বর্ষাকাল হওয়ায় বাড়ির আঙ্গিনা এবং মাঠঘাট পানিতে তলিয়ে কর্দমাক্ত হওয়ায় কৃষকরা ধান কেটে সড়কে তুলে সড়কের অর্ধেক জুড়ে মেশিন বসিয়ে ধান মাড়াইয়ের কাজ করছে। শুধু ধান মাড়াই নয়, ধান এবং খড় শুকানোর কাজও সারছে তারা মহাসড়কে।
ধান মাড়াই শেষে কৃষকরা ধানের অবশিষ্টাংশ সড়কে ফেলে রাখে। শুকানোর জন্য সড়ক জুড়ে খড় বিছিয়ে রাখে কৃষকরা। বৃষ্টি আসলে ওই খড় সড়কে কর্দমাক্ত হওয়ার পরে সেগুলো সরানো হয় না।
সড়ক জুড়ে ধানমাড়াই করায় প্রতিদিন এই মহাসড়কে শত শত যানবাহন মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এভাবে সড়ক দখল করে ধানমাড়াই এবং ধান ও খড় শুকানোর কারণে গত ১ মাসে আমতলীর অংশে প্রায় ২ শতাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সড়কে খড় শুকানোর কারণে অহরহ ঘটছে মটরসাইকেল দুর্ঘটনা।
শাখারিয়া থেকে-কলাপাড়া মহাসড়কের, শাখারিয়া, কেওয়াবুনিয়া, মহিষকাটা, আমড়া গাছিয়া, সিকদার বাড়ি, ডাক্তার বাড়ি, উরশিতলা, ছুরিকাটা, মানিকঝুরি, আকনবাড়ি খলিয়া এলাকার মহাসড়কের পাশে অবস্থিত গৃহস্থ বাড়ির কৃষকরা মহাসড়কে এই কাজটি করছে।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) এবং সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ছুরিকাটা মোড়ে কৃষকরা তাদের আউশ ধান সড়কে তুলে মেশিন বসিয়ে মাড়াই করছে। ধান মাড়াই শেষে ধানের খড় এবং অবশিষ্টাংশ সড়কে ফেলে রাখছে।
মানিকঝুড়ি গ্রামের কৃষক রিপন মিয়া জানিয়েছেন, বাড়িতে ধান নেওয়ার জায়গা নাই। সেজন্য রাস্তার মধ্যে ধান শুকাই।
ছুড়িকাটা গ্রামের কৃষক শাহজাহান বলেন, বৃষ্টি হয়। সেজন্য রাস্তায় কাঁদা জমে যায়। এজন্য রাস্তায় ধান শুকানোর জন্য নিয়ে আসি। তবে রাস্তার মধ্যে খড়গুলো থেকে যায়।
ফকির বাড়ী স্ট্যান্ডের গৃহবধূ আয়শা বেগম জানান, আমরা রাস্তার মধ্যে ধান না শুকালে ভাত রান্না হবে কেমন করে।
বাস চালক আবদুস সালাম ও মজিবর জানিয়েছেন, রাস্তার অর্ধেক নিয়ে মেশিন বসিয়ে ধান নেন কৃষকরা। আবার রাস্তার মধ্যে ধানের খড় এবং বিভিন্ন ধরনের ময়লা রাস্তায় ফেলে যায়। সেজন্য বাস চালাতে অনেক সমস্যা হয়। অনেক সময় খড় পঁচে রাস্তায় থেকে যায়।
মটর সাইকেল চালক আলআমিন বলেন, ধানের পঁচা খড়ে রাস্তা পিছলা হয়ে যায়। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টা মটর সাইকেল পিছলায়।
বরগুনা বাস মালিক সমিতির লাইন সম্পাদক অহিদুজ্জামান সজল মৃধা বলেন, সড়ক দখল করে ধান মাড়াই করলে যেমন সড়কের ক্ষতি হয় তেমনি গাড়ী দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.কাওছার হোসেন জানিয়েছেন, মানুষ ও যানবাহন চলাচলে সড়কে বাঁধা সৃষ্টি করা যাবে না। সড়ক ও জনপথ বিভাগ অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাননিউজ/জেআই