নিজস্ব প্রতিনিধি, যশোর: দেশে প্রথমবারের মতো কাকিলা মাছের কৃত্রিম প্রজননের কলাকৌশল উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) স্বাদু পানি উপকেন্দ্র যশোরের বিজ্ঞানীরা।
তিন বছর নিবিড় গবেষণার পর গত ২৫ আগস্ট প্রজননকৃত মাছের ডিম থেকে পোনা বের হওয়ার মধ্য দিয়ে সফলতা পান তারা। এখন এই মাছ চাষ সম্ভব হবে পুকুর বা বদ্ধ জলাশয়ে।
মূলত সুচের মতো লম্বাটে এই মাছটি ‘নিডল ফিস’ প্রজাতির। বাংলায় এটি কাকিলা, কাকলে, কাইক্কা, গাংটুরি, কাইলাসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। জলবায়ুর প্রভাব, প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ নানা কারণে বিলুপ্ত হতে চলেছিলো এ জাতের মাছ।
কাকিলার দেহ লম্বা ও সামান্য চাপা। মাছটি প্রায় সিলিন্ডার আকৃতির। এগুলো লম্বায় ২৫ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার হয়। পরিণত পুরুষ মাছের মাথার শীর্ষে লাল চূঁড়া দেখতে পাওয়া যায়। আর যার জন্য স্ত্রী ও পুরুষ মাছ সহজেই আলাদা করা যায়।
পুরুষ মাছের দেহ স্ত্রী মাছের তুলনায় অধিক সরু ও আকারে একটু ছোট হয়। এটি শিকারি মাছ। এরা ছোটমাছ খেয়ে থাকে। প্রাকৃতিক ও প্রবাহমান জলাশয়ে বিশেষ করে নদীতে ও বর্ষাকালে প্লাবিত অঞ্চলে এই মাছ প্রজনন করে। পরিণত মাছেরা ভাসমান জলজ উদ্ভিদ নেই এমন স্থানে বসবাস করলেও জলজ উদ্ভিদের পাতার নিচে ও ভাসমান শেকড়ে এদের স্ত্রীরা ডিম পাড়ে।
জানা যায়, প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী কাকিলা মাছে ১৭.১ শতাংশ প্রোটিন, লিপিড ২.২৩ শতাংশ, ফসফরাস ২.১৪ শতাংশ ও ০.৯৪ শতাংশ ক্যালিসিয়াম রয়েছে। যা অন্যান্য ছোট মাছের তুলনায় অনেক বেশি।
গবেষক দলের প্রধান ও বিএফআরআই যশোর স্বাদু পানির উপকেন্দ্রের প্রধান ড. রবিউল আউয়াল হোসেন জানান, কাকিলা মাছের কৃত্রিম প্রজনন বাংলাদেশে এই প্রথম। বিশ্বের কোথাও এ মাছের কৃত্রিম প্রজননের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সান নিউজ/ এমবি