নিজস্ব প্রতিবেদক, বোয়ালমারী (ফরিদপুর): ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মধুমতী নদীর অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে। যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বিদ্যালয়গুলো।
বিদ্যালয় চারটি হলো, উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চরনারানদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ নং চরপাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
জানা যায়, উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চরনারানদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৮০ সালে স্থাপিত এবং ১৯৯৩ সালে পুনঃনির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়টির বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০০ জন। বিদ্যালয়টি থেকে নদী মাত্র ৩ হাত দূরে অবস্থান করছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয়টি রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নব খাতুন বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়টি থেকে নদী মাত্র ৩ হাত দূরে অবস্থান করছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয়টি রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
একইভাবে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ নং চরপাচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩৭ নং পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৯৫ সালে স্থাপিত। নতুন একতলা ভবনটি নির্মিত হয় ২০১৪ সালে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা বর্তমানে ৮৯ জন। এই বিদ্যালয়টিও খরস্রোতা মধুমতি নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। ভাঙতে ভাঙতে বিদ্যালয়ের ভবনের মাত্র ১০ গজের মধ্যে চলে এসেছে নদীটি। ভাঙন অব্যাহত থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে পুরো ভবনটাই বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এ ব্যাপারে বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন জানান, বিদ্যালয়ের ভবন থেকে নদী এখন সামান্য কয়েক গজ দূরে অবস্থান করছে। যেকোন সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে বিদ্যালয়টি।
পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৩৫ সালে স্থাপিত। এরপর ২০১০ সালে পুনঃনির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়টির বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৭৫ জন। বর্তমানে বিদ্যালয়টি থেকে মাত্র ৫০ হাত দূরে অবস্থান করছে মধুমতি নদী।
১ নং চরপাচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৭২ জন। বিদ্যালয়টি নদী থেকে ৩০-৩৫ হাত দূরে আছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রীতিকনা বিশ্বাস বলেন, আমাদের এই চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এরমধ্যে পশ্চিম চরনারানদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি খুবই ঝুঁকির মধ্যে। যেকোন মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী জানান, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নদীগর্ভে কোন বিদ্যালয় বিলীন হয়ে গেলে দ্রুত অন্য কোন নিরাপদ স্থানে সেটি পুনঃস্থাপন করা হবে।
জানতে চাইলে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) সন্তোষ কর্মকার বলেন, আপদকালীন বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে বিদ্যালয়গুলো রক্ষা করতে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য করা আবেদনটি গত ২৫ মে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় হয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রকল্পটি একনেক সভায় চূড়ান্ত হবে।
সান নিউজ/এমকেএইচ