নিজস্ব প্রতিনিধি, কুমিল্লা: কুমিল্লা সদর উপজেলায় শ্বশুর-শাশুড়িকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী নাজমুন নাহার চৌধুরী ওরফে শিউলি (২৫) এবং তার দুই সহযোগী জহিরুল ইসলাম সানি (১৯) এবং মেহেদী হাসান তুহিনকে (১৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) কাজী মো. আবদুর রহিম। এর আগে গত রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে সুবর্পুণর গ্রামের মীরবাড়িতে পল্লী চিকিৎসক বিল্লাল হোসেন (৬৫) ও তার স্ত্রী সফুরা বেগম (৫৫) নামের দম্পতিকে খুনের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, জেলা পুলিশ ও ডিবির যৌথ অভিযানে কুমিল্লা শহরের দক্ষিণ চর্থা এলাকা থেকে জহিরুল ইসলাম সানিকে এবং বরুড়া উপজেলার আড্ডা বাজার এলাকা থেকে মেহেদী হাসান তুহিনকে আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃত সানি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের আবদুর রহিম মজুমদারের পুত্র এবং তুহিন কুমিল্লার লালমাই উপজেলার দক্ষিণ জয় কামতা গ্রামের শাহাবুদ্দিনের পুত্র।
পুলিশ আরও জানায়, দীর্ঘদিন ধরে নানা বিষয় নিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল শিউলির। তার স্বামী সৈয়দ আমান উল্লাহ ওমান প্রবাসী। কিন্তু পারিবারিক এসব বিরোধে স্বামীকে পাশে পাচ্ছিলেন না শিউলি। এর জের ধরে রাগে-ক্ষোভে খালাতো ভাই সানি ও তার বন্ধু তুহিনকে সাথে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা সাজায় শিউলি। খুন করা হয় শ্বশুর সুবর্ণপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সৈয়দ বিল্লাল হোসেন (৭৫) ও তার স্ত্রী সফুরা খাতুনকে (৫৫)।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, পারিবারিক কলহের জের ধরে পুত্রবধূ শিউলি দীর্ঘদিন ধরে তার শ্বশুর-শাশুড়িকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসছিলো। ঘটনার দিন (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে শিউলি কুমিল্লা শহরে বসবাসরত তার খালাতো ভাই জহিরুল ইসলাম সানি ও তার বন্ধু তুহিনকে কয়েকজন সাথে নিয়ে তাদের বাড়িতে আসতে বলে। কিন্তু তারা কেবল দু’জনই শিউলির শ্বশুর বাড়িতে যায়। তারা ঘরে ঢুকার কিছুক্ষণের মধ্যেই শিউলি তার ওড়না দিয়ে শাশুড়ি সফুরা বেগমকে পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে। তখন বাকি দু’জন বৃদ্ধ সফুরার হাত পা বেঁধে ফেললে শিউলি কম্বল চেপে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে।
এ সময় শিউলির শ্বশুর পল্লী চিকিৎসক সৈয়দ বিল্লাল হোসেন ঘরের বাইরে ছিলেন। একটু পরে তিনি ঘরে ঢুকলে তাকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়। চাঞ্চল্যকর এ জোড়াখুনের পরপরই পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে শিউলিকে আটক করে। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মুখ খোলে সে। তার দেয়া তথ্য মতে হত্যায় আরো দু’জনের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ।
সান নিউজ/এনএএম/এমকেএইচ