নিজস্ব প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদীতে বন বিভাগ কর্তৃক আদিবাসীদের জুমের ফসল কেটে ফেলার প্রতিবাদে ও যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবিতে বাগাছাস নালিতাবাড়ী থানা শাখার সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত।
নালিতাবাড়ী উপজেলার ওয়ার্ল্ড ভিশনের পুরাতন সাব সেন্টারে বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) নালিতাবাড়ী থানা শাখার সভাপতি সোহেল রেমার সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক বাঁধন চাম্বুগং এর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ১২ আগস্ট শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার অন্তর্গত বালিজুরি খ্রিষ্টান পাড়ায় বন বিভাগ কর্তৃক পাঁচটি গারো আদিবাসী পরিবারের জুমের ফসল ও বাগান কেটে ফেলা হয়। উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত ২৬ আগস্ট একটি বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় বাগাছাস নালিতাবাড়ী থানা শাখা।
কিন্তু জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে বাগাছাস, নালিতাবাড়ী থানা শাখা তাদের ডাকা আজকের বিক্ষোভ সমাবেশ স্থগিত করে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা তাদের চার দফা দাবি উত্থাপন করেন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) নালিতাবাড়ী শাখার সভাপতি সোহেল রেমার আহবানে কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ লিখিত বক্তব্য পেশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নালিতাবাড়ী শাখার সহসভাপতি রাসেল নেংমিনজা,শিক্ষা ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক সঞ্জিতা চিছাম,শ্রীবরদী শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক কাঞ্চন ম্রং, ঝিনাইগাতী শাখার সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শান্ত চিরান সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসা গারো আদিবাসীদের উপর এই বর্বর হামলা নতুন কিছু নয়। অনেক বছর ধরেই ভূমি সংক্রান্ত সমস্যায় জর্জরিত এই এলাকায় বসবাস করা গারো আদিবাসী সহ অন্যান্য আদিবাসী জনগোষ্ঠী।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, আদিবাসীরা বন তৈরি করে, আর সেই বন কেটে ফেলে একদল ভূমি ও বন দস্যুরা। গত ১২ আগস্টের ঘটনা এরই একটি জলজ্যান্ত প্রমাণ। এই প্রসঙ্গে বাগাছাস, কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এই ছাত্র নেতা আরো বলেন, শুধু শেরপুরে নয় বন বিভাগ সারা বাংলায় আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বন ধ্বংস সহ আদিবাসীদের ফসল কেটে দিচ্ছে।
কিন্তু এর প্রতিকার না হওয়ায় আদিবাসীরা উচ্ছেদ আতঙ্কে রয়েছেন। তাই তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের যথাযথ ক্ষতিপূরণসহ এই পাশবিক কাজে যুক্ত বন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অপসারণ করতে হবে এবং শাস্তি প্রদান করতে হবে। অন্যথায় এই সমস্যার আশু সমাধান না হলে বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) কঠোর অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা ঘটনার সুস্থ তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান। প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে চার দফা দাবি জানিয়েছে।
দাবি সমূহ :
১. ক্ষতিগ্রস্ত ৫ টি পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
২. এই বর্বর কাজে যুক্ত রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ সকলকে অপসারণ সহ যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. বিভিন্ন প্রকল্প সহ পর্যটন কেন্দ্র এবং সামাজিক বনায়নের নামে আদিবাসীদের উচ্ছেদ ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।
৪. সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে।
সাননিউজ/এএসএম