নিজস্ব প্রতিনিধি, দেবীদ্বার (কুমিল্লা): কুমিল্লার দেবীদ্বারে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে আদালতে দায়ের করা মামলা তুলে না নেয়ায় বাদী পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) তাদেরকে আটক করা হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।
এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলা সুলতানপুর ইউনিয়নের কুরছাপ পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়।
হামলায় ভুক্তভোগী কিশোরীসহ তার বাবা-মা আহত হয়েছেন। স্থানীরা তাদেরকে উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এরপর পুলিশের সহায়তায় রাতে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, মো. কাউছার (৩৫), মো. হাসান (২৫), নুরুল ইসলাম (৬৫), মো. কামাল ৫৫), সফিকুর রহমান (৬০), নারগিছ (৩০), আনিকা (২৫), কুলছুম (৪০)। তারা সাবাই কুরছাপ গ্রামের বাসিন্দা এবং একই পরিবারের সদস্য। ওই মামলার বাদী-বিবাদী আপন চাচাতো ভাই বোন। ওদের মধ্যে দির্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ৩২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামি মো. হাসানের বড় ভাই কাউছার আহম্মেদ ভুক্তভোগী কিশোরীর মাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করছেন। এ সময় তাকে স্থানীয় কয়েকজন থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে ওই কিশারীর মা অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৪ মে বিকেল ৩টায় ওই কিশোরীকে ফাঁকা ঘরে ধর্ষণচেষ্টা চালান হাসান। এ ঘটনা আসামির এক আত্মীয় দেখে ফেলায় বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে অচেতন অবস্থায় স্থানীয়রা ওই কিশোরীকে ঘর থেকে উদ্ধার করে। পরদিন মেয়েটির বাবা কুমিল্লা আদালতে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয় হাসানের পরিবার। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর সহযোগিতায় মামলা তুলে নিতে বাদী পরিবারকে চাপ প্রয়োগসহ বিভিন্ন হুমকি দিতেন। পরে ২০ আগস্ট দুপুরে হাসানের বড় ভাই কাউছারের নেতৃত্বে ওই পরিবারের ওপর হামলা করে আসামিরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছিল। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
সান নিউজ/এমকেএইচ