নিজস্ব প্রতিনিধি, দিনাজপুর: দিনাজপুরে ফিল্মী স্টাইলে মা ও ছেলেকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়কালে সিআইডির এক এএসপিসহ তিন পুলিশ সৈদস্যকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বিকালে দিনাজপুর সদর উপজেলার বাঁশেরহাট এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। তারা হলেন, সিআইডির রংপুর কার্যালয়ের এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক। অপহরণের শিকার মা জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীর চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেডাই গ্রামের বাসিন্দা।
লুৎফরের ভাগ্নে শামসুল আলম মানিক জানান, চলতি মাসের প্রথম দিকে চিরিরবন্দর উপজেলার পলাশ নামের এক ব্যক্তি রংপুর সিআইডি কার্যালয়ে একই উপজেলার জনৈক লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকা প্রতারণার একটি অভিযাগ করেন। পরে সোমবার (২৩ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবিরের নেতৃত্বে একটি টিম চিরিরবন্দর উপজলার লুৎফর রহমানের বাড়িত অভিযান চালায়। লুৎফরকে না তারা পেয়ে তার স্ত্রী জহুরা বেগম ও ছেলে মো. জাহাঙ্গীরকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান।
মানিক আরও জানান, পরে লুৎফর রহমানকে ফোন করে তার স্ত্রী-সন্তানের মুক্তির বিনিময়ে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকালে হাজি দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে স্ত্রী ও সন্তানকে উদ্ধারে মুক্তিপণের সাড়ে আট লাখ টাকা দিতে যায় স্বামী লুৎফর রহমান ও তার ভাই রমজান আলী।
এদিকে তাদের সঙ্গে সিভিল পোশাকে পুলিশ রয়েছে টের পেয়ে অপহরণকারীরা সঙ্গে থাকা মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় দশ মাইল নামক স্থানে পুলিশ তাদের ধরে ফেলে। এর আগেই বিষয়টি তিনি চিরিরবন্দর থানা পুলিশকে জানিয়ে রাখেন। এর পর সেখান থেকে জেলা পুলিশ ও সিআইডির সহযোগিতায় তাদের আটক করা হয়।
এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার বলেন, এখনই বিস্তারিত বলা যাবে না। বিস্তারিত জানতে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধও জানান তিনি।
তবে দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার বিস্তারিত সাংবাদিকদের জানানো হবে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
অন্যদিকে রংপুর সিআইডির ভারপ্রাপ্ত এসপি আতাউর রহমান বলেন, আটকদের মধ্যে একজন এএসপি, একজন এএসআই ও একজন কনস্টেবল থাকার কথা শুনেছি। তারা একটি অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে যান। সরকারি গাড়ি ব্যবহার না করে এবং অনুমতি ছাড়া তারা ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে অপারেশনে যান। আটকের পর আমাকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অফিসিয়াল অনুমতি ছাড়া ছুটিতে থাকা দুজন কনস্টেবলকে নিয়ে কোথায় কে কি করেছেন এ দায়িত্ব আমরা অফিসিয়ালি নেব না। তবে এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/এমকেএইচ