নিজস্ব প্রতিনিধি,কক্সবাজার : চলছে মহামারি করোনার ক্রান্তিকাল। আর এই কারণেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণকাজ প্রায় বছরখানেক বন্ধই ছিল। এর পরও দ্রুত এগোচ্ছে স্বপ্নের ‘দোহাজারি-কক্সবাজার-ঘুমধুম’ রেললাইন স্থাপনের কাজ। ইতিমধ্যে রেললাইনটির কক্সবাজার অংশের প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রেলট্র্যাক বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এছাড়াও পুরোদমে চলছে আইকনিক স্টেশন, ছোট-বড় সেতু, কালভার্ট, লেভেল ক্রসিং ও হাইওয়ে ক্রসিংয়ের কাজও। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এ প্রকল্পের ১২৮ কিলোমিটার রেলপথে স্টেশন হবে ৯টি। পর্যটননগরী কক্সবাজারে হচ্ছে ঝিনুক আকৃতির আইকনিক স্টেশন। সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর হচ্ছে তিনটি বড় সেতু। সাতকানিয়ার কেঁওচিয়ায় নির্মাণ হচ্ছে উড়াল সেতু।
করোনার প্রথম ঢেউয়ে সংক্রমণ এড়াতে কাজ বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়কালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদের প্রকল্প এলাকায় রেখেই কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে রামুর পানিরছড়া বাজার হয়ে কক্সবাজারমুখী রেলপথ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। দোহাজারীতে তিন কিলোমিটার সিগন্যাল তার বসানো সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় তিন কিলোমিটার ও রামু উপজেলার পানিরছড়ায় দুই কিলোমিটার রেলট্র্যাক স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। যা এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান।
প্রকল্পের কক্সবাজার অংশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল পাটোয়ারি বলেন, সড়কের ৫৭ কিলোমিটার বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছি আমরা। ইতিমধ্যে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি ও বর্ষা মৌসুমের প্রতিকূলতার মধ্যেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে বলে আশা করছি। ইতিমধ্যে ঈদগাঁওতে তিন কিলোমিটার, রামুর পানিরছড়ায় দুই কিলোমিটার রেলট্র্যাক বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। কক্সবাজার সদর ও চকরিয়াতে পুরোদমে কাজ চলছে।
প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পের দোহাজারী-কক্সবাজার অংশের শতভাগ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী। পর্যটননগরীর সঙ্গে রাজধানীর রেল যোগাযোগ ২০২২ সালের মধ্যে স্থাপিত হবে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, রেল চালু হলে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে, তা নয়। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পালটে যাবে। জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে। প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ২০২২ সালে কাজ শেষ হবে। এটি প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার প্রকল্প। দ্রুত কাজ শেষ করতে যখন যা সহযোগিতা প্রয়োজন তা করছি।
উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালে প্রথম দিকে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় দোহাজারি থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের কাজ।
সাননিউজ/ জেআই