নিউজ ডেস্ক
সুপার সাইক্লোন আম্পানের প্রভাবে পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপকূলীয় অঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশের প্রায় এক কোটি গ্রাহকের। বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ে আছে বিদ্যুতের তারের উপর। আবার কোথাও কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে আছে।
সারারাতের ঝড়বৃষ্টির কারণে মেরামতের তেমন সুযোগ না থাকায়, ঝড় থামার সাথে সাথেই মেরামতের কাজে নেমেছে বিতরণ সংস্থার লোকেরা। কিছু কিছু অঞ্চলে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়েছে।
এদিকে পল্লি বিদ্যুৎ বোর্ড বলছে, ‘আম্পানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে পল্লি বিদ্যুৎ কারণ আমাদের গ্রাহক সংখ্যা অন্যদের থেকে অনেক বেশি। উপকূলের অধিকাংশ জেলা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। ভোর থেকেই মেরামতের কাজ শুরু করেছে আমাদের কর্মীরা।’ তিনি আরো জানান, দুই কোটি ৮৫ লাখ গ্রাহকের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে।
গ্রাহকদের মধ্যে ঢাকার আশপাশ ছাড়া সবাই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যশোর, খুলনা, বরিশাল, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার বেল্টে ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। খোঁজ নিয়ে জানা যায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে প্রায় ২০০ এর মতো। অসংখ্য বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে গাছ পড়ে। দুপুরের মধ্যে বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ ( পিজিসিবি) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া জানান, ‘আমাদের গ্রিডে এখন বিদ্যুৎ আছে। কিন্তু বিতরণ লাইনের সমস্যার কারণে ভোলা থেকে সুন্দরবন এলাকায় বিদ্যুৎ নিতে পারছে না। আমাদের এখন একমাত্র সমস্যা কুষ্টিয়াতে। সেখানে জেলা শহরসহ আশেপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ভেড়ামারা থেকে বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ সরবারহের চেষ্টা চলছে।’
অন্যদিকে উপকুলীয় এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক উদ্দিন জানান, ‘সারারাত ঝড়ের কারণে ফিডারগুলো একটা পর্যায়ে এক এক করে সব বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকটি গ্রিডও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।’ তিনি আরো বলেন, বর্তমানে তাদের প্রায় ১২ লাখ গ্রাহকই ক্ষতিগ্রস্ত। তবে রাতের মধ্যে বেশিরভাগ এলাকায় স্বাভাবিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তবে প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে তিনি জানান।
অপরপক্ষে পিডিবিরও বেশ কিছু লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারাও সকাল থেকে কাজ শুরু করেছে। আজ রাতের মধ্যে সরবরাহ ঠিক হবে বলে তারা আশা করছে।