নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কমলাপুর গ্রামের হতদরিদ্র নিঃসন্তান দম্পতি আফজাল হোসেন ও আরজিনা বেগম। স্বামী-স্ত্রী মিলে ৩০টি ভেড়া পালন করতেন। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে কয়েকটি বিক্রি করে যা পেতেন, তা দিয়েই চলতেন সারা বছর। এটা ছিলো তাদের আয়ের প্রধান উৎস। কিন্তু প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে কৃমিনাশক নিয়ে খাওয়ানোর পর ১১টি ভেড়া মারা গেছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছে বাকি ভেড়াগুলোও।
আফজাল হোসেন জানান, তাদের নিজের চাষের কোনো জমি নেই। বাড়ির আঙিনায় স্বামী-স্ত্রী মিলে ছোট একটি খামার গড়ে তুলেছেন। ৫ বছর আগে ৫টি ভেড়া নিয়ে খামার গড়ে তোলেন। এখন তাদের খামারে ৩০টি ভেড়া রয়েছে। ৬ মাস পরপর কিছু ভেড়া বিক্রি করে যা পান, তাই দিয়েই সংসার চলে তাদের।
আফজাল হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরে ভেড়াগুলো পাতলা পায়খানা করছিলো। কিন্তু সেটি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় প্রতিকারের পরামর্শের জন্য গত মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সকালে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে যাই। সেখান থেকে কিছু কৃমিনাশক ওষুধ দেয়া হয়। বুধবার সকালে এক প্যাকেট কৃমিনাশকের অর্ধেক পানিতে গুলিয়ে ১৮টি ভেড়াকে খাওয়াই।
আফজাল হোসেনের স্ত্রী আরজিনা বেগম বলেন, ওষুধ খাওয়ানোর কিছুক্ষণ পর থেকে ভেড়াগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। ছটফট করতে থাকে। আধা ঘণ্টার মধ্যেই এক এক করে মারা যাওয়া শুরু করে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১১টি মারা যায়। অন্যগুলোও অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, এই ভেড়া পালন করতে গিয়ে মানুষের কাছে লক্ষাধিক টাকা দেনা হয়েছে। যে দেনা পরিশোধ করার ক্ষমতা আর আমাদের থাকলো না।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আতিকুজ্জামান বলেন, ভেড়ার মালিক মঙ্গলবার আমাদের অফিসে এসেছিলেন। সবকিছু শুনে তার ভেড়াগুলোর জন্য কৃমির ওষুধ দেয়া হয়। সেগুলো নিয়ম অনুযায়ী খাওয়ালে এভাবে মারা যাওয়ার কথা নয়। এরপরও কেন মারা গেল, তা নিশ্চিত হতে নমুনা সংগ্রহ করেছি। এই নমুনা পরীক্ষার পর মৃত্যুর কারণ বোঝা যাবে।
সান নিউজ/এফএআর