কক্সবাজার প্রতিনিধি:
‘আম্ফান’ মোকাবেলায় কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। সোমবার (১৮ মে) উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের দিনব্যাপী যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
কক্সবাজারের রামু সেনানিবাস থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় স্থানীয় সেনা ক্যাম্পগুলোর তত্ত্বাবধানে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
রোহিঙ্গা নাগরিকদের ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ থেকে সুরক্ষায় দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো ও উদ্ধার কার্যক্রমে দেশি-বিদেশি সব সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ নিশ্চিত করার বিষয়গুলো নিয়ে মহড়া অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন,আরআরসি, এনজিও, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সদস্য ও ক্যাম্পে বসবাসরত প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশগ্রহণ করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দেশে আসুক বা না আসুক সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দশম পদাতিক ডিভিশন আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ হরেছে।
প্রতিটি ক্যাম্পে সেনা সদস্যদের নেতৃত্বে মাঝি, সাবমাঝি ও স্বেচ্ছাসেবকদের আপদকালীন দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি প্রয়োজনে উদ্ধার যান ও প্রয়োজনীয় উদ্ধার সামগ্রী। এছাড়া জেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি এনজিও এবং আইএনজিও সংস্থাগুলোর সঙ্গে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠ পর্যায়ে আপদকালীন সময়ের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আর্মি ক্যাম্পগুলোতে দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিনিময় করা হয়েছে নিজেদের প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা।
এদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে বর্তমানে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১০৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং দিক পরিবর্তন করে উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে শেষ রাত হতে ২০ মে বিকাল বা সন্ধ্যায় বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটার -এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার বা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে । ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নং বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে এবং উপকূলীয় জেলা সমূহ ও এর অন্তর্ভুক্ত দ্বিপসমূহ ৭ নং বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।