নিজস্ব প্রতিনিধি, মুন্সিগঞ্জ: পদ্মা সেতুর পিলারে রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের ধাক্কার কারণ হিসেবে ইংল্যান্ড মাস্টার অফিসার ও হুইল সুকানির অদক্ষতাকেই দায়ী করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে এমন অভিযোগ করে একটি বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি)।
এদিকে এ ঘটনায় বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার মো. দেলোয়ারুল ইসলাম ও হুইল সুকানি মো. আবুল কালাম আজাদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ফেরির মাস্টার ও সুকানির বরখাস্তের আদেশ বলা হয়, জলযানে কর্মরত ভারপ্রাপ্ত মাস্টার অফিসার ও হইল সুকানি দক্ষতার সঙ্গে ফেরি পরিচালনা করলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো মর্মে প্রতীয়মান হয়। পদ্মা সেতুর নিচে এ ধরনের দুর্ঘটনা কোনোমতে কাম্য নয়। তাদের এ ধরনের কার্যকলাপ চাকরির নিয়ম-শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উল্লেখিত দুর্ঘটনার জন্য ভারপ্রাপ্ত মাস্টার কর্মকর্তা মো. দেলোয়ারুল ইসলাম (ইনল্যান্ড মাস্টার কোড নং-১১২৭৬), সুকানি হিসেবে কর্মরত মো. আবুল কালাম আজাদকে (হইল সুকানি কোড নং-৮৩৮৯৯) সাময়িক বরখাস্ত করে ডিসিপিএম ফ্রন্ট দফতরে নিয়মিত হাজিরা থাকার নির্দেশ প্রদান করা হলো।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, এ ঘটনায় বিআইডব্লিউটিসি’র পরিচালক (কারিগরি) মো. রাশেদুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিতে বিআইডাব্লিউটিসির জিএম (মেরিন) ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ হাসেমুর রহমান চৌধুরী, পরিচালক (নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালনা) মো. শাহজাহান খান, শিমুলিয়াঘাটের এজিএম মো. রুবেলুজ্জামান ও মেরিন আহমেদকে সদস্য করা হয়েছে। কমিটিকে সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের শনাক্তকরণ এবং দায়-দায়িত্ব নিরূপণসহ সুপারিশ সহকারে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার পর সোমবার রাত ১১টার দিকে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাংলাবাজার থেকে ছেড়ে আসা ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা খায়। এ সময় ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক দুটি প্রাইভেটকারের ওপর পড়লে গাড়ি দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফেরিতে ফাটল ধরে। আহত হয় নারীসহ অন্তত পাঁচজন।
এর আগে গত ২৩ জুলাই নির্মাণাধীন পদ্মা বহুমুখী সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে ‘শাহজালাল’ নামে রো রো ফেরির সংঘর্ষ হয়। এতে ফেরিটির অন্তত ২০ জন যাত্রী আহত হন। ঘটনার পরপরই ফেরির ইনচার্জ ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার আব্দুর রহমানকে বরখাস্ত করে বিআইডব্লিউটিসি।
ঘটনা তদন্তে ওই দিনই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিআইডব্লিউটিসি। তাদের দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিলারের সঙ্গে সংঘর্ষের পেছনে রো রো ফেরিটির ইনচার্জ মাস্টার আব্দুর রহমান খান ও সুকানির সাইফুল ইসলামের দায়িত্বহীনতা রয়েছে। ফেরি বা অন্য কোনো জলযানের সংঘর্ষ থেকে নিরাপদে রাখতে পদ্মা সেতুর পিলারগুলো রাবার দিয়ে মোড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে ওই কমিটি।
সান নিউজ/ এমবি