নিজস্ব প্রতিনিধি,চট্টগ্রাম: মানুষের সঙ্গে বসবাস তার। বলা যায় জন্মের পর থেকে এমনই। বেড়ে ওঠা মানুষের স্নেহের মধ্যেই। ফলে মানুষকেই আপন করে নিয়েছিল সে। কিন্তু নিয়ম বলে তার স্থান মানবকুলে নয়। ফলে তাকে ফিরে যেতে হয় বন্দি খাঁচায়।
বলছি গত বছরের ১৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বাঘিনী জয়ার ঘরে জন্ম নেয়া শাবকটির কথা। যাকে মৃত্যুর কোল থেকে বাঁচিয়ে মানবশিশুর মতো আদর-স্নেহে বড় করে তোলেন চিড়িয়াখানার চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মীরা।
সে সময় একসঙ্গে তিনটি শাবকের জন্ম দিয়েছিল জয়া। কিন্তু এর মধ্যে দুটির মৃত্যু হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় একটি। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে বেঁচে যাওয়া সেই শাবকটির নাম রাখা হয় ‘জো বাইডেন’।
বয়স পাঁচ মাস পূর্ণ হওয়ায় চলতি বছরের ২১ এপ্রিল জো বাইডেনকে খাঁচায় ছেড়ে দেয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সেই থেকেই চিড়িয়াখানায় বেড়ে উঠছে সে।
চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ও চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, জন্মের পর মায়ের দুধ না পেয়ে তিনটির মধ্যে দুটি শাবকের মৃত্যু হয়েছিল। ফলে অপরটিকে আমরা মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে আলাদা রাখি।
খেলনা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করা হয় শাবকটির জন্য। ছোট শিশুদের মতোই ফিডারে দুধ খাওয়ানো হতো। শুরুতে বাজারে পাওয়া বিড়ালের দুধ খাওয়ানো হতো। পরে ছাগলের দুধের সঙ্গে অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে খাওয়ানো হতো।
এতে শারীরিকভাবে বেশ পরিবর্তন আসায় এবং বয়স পাঁচ মাস পূর্ণ হওয়ায় তাকে খাঁচায় ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান এ চিকিৎসক।
২০১৬ সালের নভেম্বরে ১১ মাস বয়সী রাজ ও ৯ মাস বয়সী পরীকে আনা হয় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। দেড় বছর পর ২০১৮ সালের জুলাই মাসে তাদের ঘরে তিনটি ছানার জন্ম হয়। যার মধ্যে একটির মৃত্যু হলেও বেঁচে যায় দুটি। সেই বেঁচে যাওয়া দুই বাঘিনীর নাম রাখা হয় শুভ্রা ও জয়া। এরপর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আবার বাচ্চা প্রসব করে পরী। যার নাম রাখা হয় করোনা।
সবশেষ চলতি বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে তিন শাবকের জন্ম দেয় পরী। সব মিলিয়ে চার বছরে তিনবার সন্তান প্রসব করে পরী। এখন পর্যন্ত রাজ-পরীর ঘরে সন্তান সংখ্যা ছয়।
সাননিউজ/এএসএম