মো. নাজির হোসেন,মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার শিলই ইউনিয়ন ও বাংলাবাজার ইউনিয়ন সংলগ্ন পদ্মা শাখা নদী বর্ষা মৌসুমে ফুঁসে উঠেছে। গত ১ মাস যাবত শাখা নদীতে ভাঙন তাণ্ডবে সদরের ওই দু'টি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম সংলগ্ন বিস্তীর্ণ ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের তীব্রতায় সেখানকার অন্তত ৩০০ একর ফসলি জমি নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে।
সরেজমিনে,সদরের শিলই ইউনিয়নের শিলই ও বাংলাবাজার ইউনিয়নের সিকদারকান্দি গ্রাম ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
শিলই গ্রাম সংলগ্ন পদ্মা শাখা নদীর তীরবর্তী ফসলি জমির মালিক আনোয়ার বেপারী (৫৫) বলেন, এই নদী চাঁদপুর থেকে মুন্সীগঞ্জের বাংলাবাজার, শিলই ও দিঘীরপাড় পাশ দিয়ে বয়ে জেলার লৌহজং উপজেলার মাওয়ার মূল পদ্মায় মিলিত হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেঁটেই পদ্মার এ শাখা নদী পারাপার হয়ে থাকেন স্থানীয়রা। তবে বর্ষা আসলেই দুকুল ছাপিয়ে স্রোতস্বিনী হয়ে উঠে। চলতি বর্ষায় শাখা নদীর দুই তীরেই ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েক'শ একর ফসলি জমি গিলে খেয়েছে পদ্মা এ শাখা নদীতে। শিলই গ্রাম থেকে বাংলাবাজার ইউনিয়নের সিকদারকান্দি গ্রাম পর্যন্ত ভাঙনের ব্যাপকতা পরিলক্ষিত হয়েছে।
কৃষক আনোয়ার বেপারী আরও বলেন, আমাদের জমিতে ধান, ঢেঁড়স, লাউ, ঝিঙা, করলা চাষ করা হয়েছিল। জমিও নেই কোন ফসলই এখন আর নেই। কমপক্ষে ১০০ হাত দূরে ছিল এই নদী। গত ১ মাসের ভাঙনে ফসলি জমি শেষ হয়ে এখন সড়কের পাশে চলে আসছে নদী।
এদিকে, ভাঙনের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে সেখানে স্থায়ী পদক্ষেপের দাবী করেছেন স্থানীয়রা। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে গেলো ২৯ জুলাই জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের এম ফার্মের (মাস্টার্স) শিক্ষার্থী আব্দুল জলিল স্বাক্ষর করে একটি আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে। ওই আবেদন পত্রে শিলই ইউনিয়নের দেড়-হাজার বাসিন্দা গণস্বাক্ষর করেছেন।
শিক্ষার্থী আব্দুল জলিল জানান, শিলই ইউনিয়ন তথা শিলই গ্রামে নদী ভাঙন এলাকায় বসবাসরত সবাই নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ। এখন ভূমিহীন হয়ে পড়ছে একের পর এক পরিবার। নদীতে ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাওয়াতে তারা এখন নি:স্ব হয়ে পরছেন৷ এই শাখা নদী এখন রাক্ষুসে নদীতে পরিণত হয়েছে। আমাদের গ্রামের সবাই এখন মহান আল্লাহর কাছে এই দুর্যোগ থেকে নাযাত কামনা করে এবং নদী ভাঙন বন্ধ করতে সরকারের সার্বিক সহায়তা কামনা করছি।
এবিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হামিদুর রহমান বলেন, ভাঙনের বিষয়টি আমাদের নজরে আসছে। পানি উন্নয়নবোর্ড ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্হল ইতোমধ্যে পরিদর্শন করা হয়েছে। এই ভাঙ্গন দ্রুত কিভাবে রোধ করা যায় সে বিষয় কাজ চলছে। আমি নিজে শুক্রবার সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি জেলা প্রশাসক বরাবর।
সাননিউজ/ জেআই