নিজস্ব প্রতিনিধি, পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর পৌর কবরস্থানে একদিকে জলাবদ্ধতা অন্যদিকে ফাঁকা জায়গা না থাকায় মরদেহ দাফন নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। নতুন করে কবরস্থানের জায়গা নির্ধারণ না করা কিংবা বর্তমান কবরস্থানের সংস্কার না করায় করোনার এই মহামারিতে পৌরবাসীর ভোগান্তি বেড়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শত বছরেরও বেশি পুরাতন পটুয়াখালী পৌরসভার নিয়ন্ত্রণাধীন কবরস্থানে এখন আর কবরগুলো সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। গত কয়েক দশকে অনেকের প্রিয়জনের কবরগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। সম্প্রতি একটু বৃষ্টিতেই কবরস্থানের সড়কে পানি উঠে যায়। পুরাতন কবরগুলো পানিতে ডুবে থাকে। ফলে এসব স্থানে নতুন কবর খুঁড়তে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গোরখোদকরা। অনেক সময় বাইরে থেকে মাটি, বালু এনে কবরস্থান উঁচু করে কিংবা কাঠের বাক্সে মরদেহ দাফন করতে হয়।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ২৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে ১৮৯২ সালে পটুয়াখালী পৌরসভা গঠিত হয়। পৌরবাসীর দাফনের জন্য সে সময়ে প্রায় সাত একর জমিতে পৌরসভার নিয়ন্ত্রণাধীন একটি কবরস্থান নির্মাণ করা হয়। তবে শত বছরের বেশি সময়ে শহরের জনসংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেলেও নতুন করে কবরস্থান নির্মাণ করা হয়নি।
এসব কারণে পৌর কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে কবর সংরক্ষণ না করার জন্য নির্দেশনা দিলেও তা কেউ মানছেন না। বিশেষ করে শহরের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এবং তাদের স্বজনদের কবরগুলো যেমন বাঁধাই করে রেখেছেন তেমনি অনেকে আবার দুই থেকে তিনজনের বেশি জায়গা নিয়ে সীমানা নির্ধারণ করেও রেখেছেন। এই অবস্থায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কবরস্থানে জায়গার সঙ্কুলান না হওয়া এবং জলাবদ্ধতার কারণে ভোগান্তি আরও বেড়েছে। নতুন করে কবর দিতে হলে বিগত সময়ের থেকে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
কয়েকজন গোরখোদক জানান, আগে এখানে কবর দিতে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হলেও এখন মাটি ভরাট, বালু ফেলা, কাঠের বক্স তৈরি বাবদ আট থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে অনেকেই প্রিয়জনের কবর জিয়ারত করতে পারছেন না। দূরে দাঁড়িয়ে থেকে কবর জিয়ারত করতে হয়।
সমস্যার কথা স্বীকার করেন পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘কবরস্থানের আশপাশের এলাকা এবং সড়কগুলো উঁচু হওয়ায় কবরস্থানের পানি বের হতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। গতবছর কবরস্থানে বালু ফেলে উঁচু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তবে সেটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বালু ফেললে বর্তমান কবরগুলো এর নিচে চাপা পড়বে, এ কারণে সেই উদ্যোগটি বন্ধ করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, কবরস্থানের ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি সড়কগুলোকে উঁচু করে কবরস্থানের জলাবদ্ধতার সমস্যার সমাধান করা হবে। পাশাপাশি নতুন একটি আধুনিক কবরস্থান নির্মাণের কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/এমএইচ